সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:৪১ পূর্বাহ্ন
আবুল কাশেম- সিলেট জেলা প্রতিনিধিঃ
দীর্ঘদিন ধরে সাংগঠনিকভাবে নিষ্ক্রিয় থাকায় ও মেয়াদোর্ত্তীর্ণ হওয়ায় সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেছে জেলা ছাত্রলীগ। বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম ও সাঃ সম্পাদক রাহেল সিরাজ স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এ ঘটনায় পাল্টাপাল্টি মিছিল-হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। এতে জনমনে আতংঙ্ক বিরাজ করছে।
জেলা ছাত্রলীগের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দীর্ঘদিন থেকে সাংগঠনিকভাবে নিষ্ক্রিয় থাকায় ও মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় সিলেট জেলা শাখার এক জরুরী সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিশ্বনাথ উপজেলা শাখার কমিটি বিলুপ্ত করা হয়। আরও বলা হয়, বিশ্বনাথ উপজেলার নতুন কমিটি গঠনে কর্মীসভার তারিখ দ্রুত জানিয়ে দেয়া হবে।
ছাত্রলীগ কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণার পর পৌর শহরে আনন্দ মিছিল করে, উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা জাকির হোসেন মামুন ও সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম রুকন গ্রুপের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
অন্যদিকে আনন্দ মিছিলের পর উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্তির প্রতিবাদ জানিয়ে পৌর শহরে প্রতিবাদ মিছিল বের করে বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি পার্থ সারথি দাশ পাপ্পু গ্রুপের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পরে সন্ধ্যা ৭টার দিকে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি-সাঃ সম্পাদক ও ছাত্রলীগের জাকির-রুকন গ্রুপের স্থানীয় নেতৃবৃন্দকে নাম উল্লেখ্য করে বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি পার্থ সারথি দাশ পাপ্পু নিজের ফেসবুক একাউন্টে একটি কটূক্তিমূলক স্ট্যাডাস দিলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়।
এরই জের ধরে ছাত্রলীগের জাকির-রুকন গ্রুপের নেতাকর্মীরা পৌর শহরের পুরাণ বাজারস্থ পাপ্পুর নেতৃত্বাধীন উপজেলা ছাত্রলীগের অস্থায়ী কার্যালয়ে (একাংশ) হামলা করে। হামলায় বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি পার্থ সারথি দাশ পাপ্পু, ছাত্রলীগ নেতা আবির আহমদ, মাহফুজুর রহমান সালমান, মাছুম খান, রাজীব আহমসহ তাদের পক্ষের ১০/১২ জন নেতাকর্মী গূরুত্বর আহত হন। পরে রাত সাড়ে ৮টার দিকে পাপ্পু গ্রুপের নেতাকর্মীরা আবার পৌর শহরে মিছিল করলে ছাত্রলীগের জাকির-রুকন গ্রুপের নেতাকর্মীরা তখন আক্রমণ করে।
এ ব্যাপারে বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি পার্থ সারথি দাশ পাপ্পু বলেন, বিএনপির দুঃশাসন ও ওয়ান এলিভেনের সময় আমি ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে অতপ্রোতভাবে জড়িত থাকার কারণেই কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের অনুমোদনে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পায়। অথচ গতকাল (বুধবার) হঠাৎ করে ১০ লাখ টাকার বিনিময়ে জেলার সভাপতি নাজমুল ইসলাম ও সাঃ সম্পাদক রাহেল সিরাজ আমাদের কমিটি বিলুপ্ত করে। এর পর রাহেল সিরাজের নির্দেশে রাজু, শামীম, রিপন, আসলাম, জাকির, সিরাজুলসহ ৩০/৩৫ অস্ত্রধারী উপজেলা ছাত্রলীগের অস্থায়ী কার্যালয়ে (একাংশ) হামলা করে। এতে পার্থ সারথি দাশসহ ১০/১২ নেতাকর্মী জন আহত হয়। এ ঘটনায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের হস্তক্ষেপ ও সুবিচার কামনা করেন। জেলার অবৈধ কমিটি বিলুপ্তির জোর দাবী জানায়।
তাদের (পাপ্পু) কার্যালয়ের হামলার সাথে আমাদের কেউ জড়িত নয় দাবী করে উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা জাকির হোসেন মামুন বলেন, সন্ধ্যার পর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি-সাঃ সম্পাদকের বিরুদ্ধে পাপ্পু-রুহেলের নেতৃত্বে মিছিল বের হলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাদেরকে প্রতিহত করে। এখন সে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে, যাহা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যে প্রনোদিত।
বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম বলেন, পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রনে রয়েছে। অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়াতে পুলিশি টহল অব্যাহত রয়েছে।