সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০১:৫৭ অপরাহ্ন
নাসির উদ্দিন শাহ্- নীলফামারী জেলা প্রতিনিধিঃ
নীলফামারীর ডিমলায় বিস্তৃর্ণ মাঠে দু‘চোখ যতদুর যায় ততদুর পর্যন্ত পাঁকা সোনালী ধান ক্ষেত। ধানের ফলন আশানুরুপ হলেও বৈরি আবহাওয়া আর শ্রমিক সংকটে দিশেহারা ধান কাটতে না পেরে বিপাকে পড়েছেন কৃষকেরা। শ্রমিকের উপর ভরসা করতে হচ্ছে তাদের ট্র ক্ষেতের ধান কাটার জন্য তবুও মিলছে না শ্রমিক। ঘনঘন বৃষ্টির ফলে ধান ক্ষেতে পানি জমাট বেঁধে আছে। যার ফলে পানিতেই ডুবে আছে কৃষকের সোনালী ধান।
সরেজমিনে উপজেলার সুন্দর খাতা, বালাপাড়া, তিতপাড়া, খগাখড়িবাড়ী, পশ্চিম ছাতনাই, গয়াবাড়ী, ছোটখাতা, চাপানী, নাউতারা, ডিমলাসহ বিভিন্ন গ্রামে দেখা যায় বিস্তৃর্ণ মাঠের পাঁকা ধান শ্রমিক সংকটের কারনে ঘরে তুলতে পারছে না কৃষক। শ্রমিক সংকটের কারনে অনেক কৃষক পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ধান কাটা শুরু করেছে। আবহাওয়া অনুকুল না থাকায় শ্রমিক সংকটের কারনে কৃষকেরা বিঘা প্রতি জমির ধান কাটতে গুনতে হচ্ছে ৪০০০ থেকে ৪৫০০ টাকা পর্যন্ত যা গত বছরের তুলনায় অনেক বেশী।
খগাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের কৃষক প্রিন্স বলেন- ৭ বিঘা জমিতে বোরো ধান রোপন করেছি। ধান ক্ষেতে হাটু পরিমান পানি। ধান কাটার শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। এমনিতেই শ্রমিক সংকট আবার ধান ক্ষেতে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধ এজন্য বাড়তি টাকা দিয়ে নিতে হচ্ছে শ্রমিক তবুও শ্রমিকের চাহিদা পূরণ হচ্ছে না ।
বালাপাড়া ইউনিয়নের কৃষক জিকরুল হক জানান- ধান কাটার শ্রমিক না থাকায় কোমর পরিমান পানিতে দু-একটা দিনমুজুর আর ছোট ছোট ছেলেদের নিয়ে ধান কাটতেছি। যদি বৃষ্টি হয় আর উজানের পানি আসে তাহলে ধান তলিয়ে যাবে।
কৃষক ছপিয়ার রহমান বলেন- উজানের পানির ঢলে ধান ক্ষেত তলিয়ে যাচ্ছে ধান কাটার শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না।
কয়েকজন শ্রমিকের সাথে কথা হলে তারা জানান- অনেকে বিভিন্ন যায়গায় কাজ করতে যাওয়ায় শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। আমরা যারা এলাকায় কাজ করি সবাই মিলে ধান কাটতেছি। ধান ক্ষেতে কোমর পরিমান পানি চার পাঁচটি কলা গাছ এক সঙ্গে বেঁধে ভেলা সাজিয়ে ধানের আঠি কোমর পরিমান পানির মধ্যে ক্ষেত থেকে তুলে ডাঙ্গায় তোলা খুবই কষ্টসাধ্য।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর সুত্রে জানায়- ডিমলা উপজেলায় বোরো মৌসুমে প্রায় ১১ হাজার ৫০০ হেক্টর জমি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। চলতি বছর এ উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি পরিমানের বোরো ধান চাষ হয়েছে।
এ বিষয়ে ডিমলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সেকেন্দার আলী বলেন- বোরো ধানের ফলন ভালো হয়েছে। শ্রমিক সংকট দেখা যাওয়ায় অনেক এলাকার কৃষকেরা আধুনিক যন্ত্রপাতি হারভেস্টার ব্যবহার করে ধান কেটে ঘরে তোলার চেষ্টা করছে। শ্রমিক সংকটের কারনে ক্ষেতের পাঁকা ধানের ক্ষতি হতে পারে তবে দু-একদিনের মধ্যে শ্রমিক সংকট থাকবে না। কৃষকেরা আমাদের প্রান। কৃষকেরা এ উপজেলার খাদ্য চাহিদা মিটিয়ে দেশের জনগনের খাদ্য চাহিদা পুরন করতে সক্ষম হবে এবং দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে সর্বাত্মক চেষ্টা করবে।