মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:৫৯ অপরাহ্ন
রুহুল আমীন খন্দকার- বিশেষ প্রতিনিধিঃ
প্রায় নয় বছর ধরে নিরীহ মানুষদের ফাঁদে ফেলে টাকা আদায় করে আসছে একটি চক্র। এই চক্রটির সদস্যরা নিজেদের বাসায় ওই সকল ভুক্তভোগীদের কৌশলে ডেকে নেয়। পরে তাদের দলের নারী সদস্যদের সঙ্গে ওই ভুক্তভোগীর আপত্তিকর ছবি তুলে টাকা আদায় করতো চক্রের সদস্যরা।
এই চক্রের সদস্যরা এক ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশের মাধ্যমে এক লাখ ১১ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এমন অভিযোগে রাজধানীর সবুজবাগ এলাকা থেকে দুই নারীসহ প্রতারক চক্রের পাঁচজন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের গুলশান বিভাগ। তাদের বিরুদ্ধে রাজধানীর একাধিক থানায় বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে।
চক্রের সদস্যদের গ্রেফতারের বিষয়টি আজ শুক্রবার ২২শে জুলাই ২০২২ইং তারিখ দুপুরের দিকে গণমাধ্যম কর্মীদের এই তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মোঃ মশিউর রহমান।
গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলো যথাক্রমে, মোঃ সাইফুল ইসলাম, মোঃ সজল তালুকদার, মোছাঃ বিথী আক্তার, মোঃ শফিকুল ইসলাম শান্ত এবং ইভা। এ সময়ে তাদের কাছে থেকে নগদ ৯০ হাজার টাকা, ঘটনায় ব্যবহৃত ১২টি লাঠি, রশি, ১২টি মোবাইল ফোন, বিভিন্ন কোম্পানির ১০টি সিম উদ্ধারমূলে জব্দ করা হয়।
গোয়েন্দা পুলিশ জানায়- নিয়মিত অভিযানের ধারাবাহিকতায় গত মঙ্গলবার বিকাল ৪-টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সবুজবাগ থানার নন্দীপাড়া দক্ষিণগাঁও এলাকায় অভিযান চালানো হয়। অভিযানে পাঁচজন প্রতারককে গ্রেফতার করা হয়। এ সময়ে তাদের কাছ থেকে নগদ ৯০ হাজার টাকা, ঘটনায় ব্যবহৃত ১২টি লাঠি, রশি, ১২টি মোবাইল ফোন, বিভিন্ন কোম্পানির ১০টি সিম উদ্ধার করা হয়।
এই চক্রের সদস্যরা পরস্পর যোগসাজসে ২০১৩ইং সাল থেকে বিভিন্ন কৌশলে তাদের চক্রের নারী সদস্যেদের মাধ্যমে নিরীহ মানুষদের ফাঁদে ফেলে। এরপর তাদের ভাড়া বাসায় ডেকে নিয়ে একটি কক্ষে আটক রেখে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা দাবি করে। তাদের দাবি করা টাকা দিতে অস্বীকার করলে এই চক্রের নারী সদস্যদের সঙ্গে ভুক্তভোগীদের আপত্তিকর ছবি তুলে ভয়ভীতি দেখায়। পরে ভুক্তভোগীর আত্নীয় স্বজনের কাছ থেকে বিকাশের মাধ্যমে টাকা আদায় করে থাকে।
উপ-কমিশনার মোঃ মশিউর রহমান গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন- এক ভুক্তভোগী আত্মসম্মান রক্ষা ও এই চক্রের হাত থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য বাধ্য হয়ে দাবি করা চাঁদার টাকা দেয়। প্রতারকরা বিভিন্ন বিকাশ অ্যাকাউন্ট নম্বরে ৭০ হাজার টাকাসহ মোট এক লাখ ১১ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। গ্রেফতারকৃত সাইফুলের বিরুদ্ধে ৮টি এবং বিথী আক্তারের বিরুদ্ধে ৩টি মামলা রয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃত সাইফুল সিলেট জেলার বাহুবল থানার হরিতলা গ্রামের মৃত আবুল কালাম আজাদের ছেলে, মোঃ সজল তালুকদার ঝালকাঠি জেলার নলছিটি থানার রুপচন্দ্রপুর গ্রামের মৃতঃ কালাম তালুকদারের ছেলে, মোছাঃ বিথী আক্তার গ্রেফতার সাইফুলের স্ত্রী এবং চুয়াডাঙ্গা জেলার সদর থানার নতুন ভান্ডারদহ গ্রামের মৃতঃ ফিরোজ ইসলামের মেয়ে, মোঃ শফিকুল ইসলাম শান্ত বরগুনা জেলার সদর থানার শিয়াালিয়া গ্রামের মোঃ শানু হাওলাদারের ছেলে ও ইভা কুমিল্লা জেলার দ্বেবিদার থানার কালিকাপুর গ্রামের মোঃ কাদির শেখের মেয়ে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।