বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৫৩ অপরাহ্ন
নাসির উদ্দিন শাহ্- নীলফামারী জেলা প্রতিনিধিঃ
নীলফামারী’র ডিমলা উপজেলা’র তিতপাড়া বড়জুম্মা দারুসালাম দাখিল মাদ্রাসার ব্যাপক অনিয়ম ও দুনীতির আভিযোগ উপজেলা প্রশাসন ও আদালত পর্যন্ত গড়েছে।অভিযুক্ত মাদ্রাসার সুপার ও পরিচালনা পরিষদের কর্মকান্ডে শিক্ষার্থীদের সুষ্ঠু লেখা-পড়ার পরিবেশ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে জেলা জুড়ে।
এ প্রতিবেদক মাদ্রাসার লেখা-পড়া’র পরিবেশ সরেজমিন পর্যবেক্ষনে গেলে জানা যায়- মাদ্রাসাটি ১৯৯৫ইং সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি ২০০২ইং সালে বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডে’র এমপিও তালিকায় অন্তভুক্ত হয়। এ প্রতিষ্ঠানে।এবতেদায়ী শাখায় ১ম শ্রেনী থেকে ৫ম শ্রেনী পর্যন্ত ১৫০ জন শিক্ষার্থী থাকার বাধ্যবাধকতা থাকলেও এবতেদায়ী শাখাটি’র শিক্ষার্থী শূন্যতায় ভুগছে। তবে কাগজে-কলমে শিক্ষার্থীর হাজিরা খাতায় উপস্থিতি ঘর পূরন করে ব্যক্তিগত কাজে ব্যস্ত থেকে প্রতিমাসে বেতন-ভাতা উত্তোলন করার অভিযোগ উঠেছে।
একই নিয়মে প্রতিবছর নতুন বই উৎসবে শিক্ষার্থীর বইয়ের চাহিদা দিয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে নতুন বই সংগ্রহ করার অভিযোগও রয়েছে। এছাড়াও এই মসজিদের নামীও আবাদী জমি মাদ্রাসার নামে যবর দখল করে খাচ্ছে মাদ্রাসার সুপার। যাহার পরিমান ৫ একর ৭৯ শতক। এ সম্পদ প্রতিবছর ইজারা বিটের মাধ্যমে কৃষিজীবিরা প্রায় আড়াই লাখ টাকা জমা দিয়ে একসানা লিজ গ্রহন করেন। এই টাকা মাদ্রাসা সুপার ও পরিচালনা পরিষদ যোগসাজসে দীর্ঘদিন ধরে আত্মসাৎ করে আসছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
শিক্ষার্থী অবিভাবকরা একজোট হয়ে মাদ্রসার অনিয়ম-দুর্নীতি প্রতিরোধে মাঠে নেমছেন।তাদের অভিযোগ সম্প্রতি মাদ্রাসার নিয়মিত পরিচালনা পরিষদ কমিটি গঠনে নির্বাচনী বিধিমালা উপেক্ষা করে মাদ্রাসার সুপার তার পছন্দের লোকজনকে নিয়ে গত ২৮শে মার্চ ২০২২ইং সালে মাদ্রাসার নিয়মিত ১১ জন বিশিষ্ট পরিচালনা পরিষদ কমিটি গঠন করেন। এ কমিটি অনুমদোনের জন্য মাদ্রাসার সুপার বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর পাঠানো হয়। চেয়ারম্যান নিয়মিত কমিটি আমলে নিয়ে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের রেজিষ্টারকে প্রজ্ঞাপন জারির আদেশ দেন।
এ আদেশ ক্রমে রেজিষ্টার গত ২৭শে এপ্রিল ২০২২ইং তছির উদ্দিনকে সভাপতি করে ১১ জন বিশিষ্ট একটি নিয়মিত মাদ্রাসার পরিচালনা পরিষদের কমিটি’র প্রজ্ঞাপন জরি করে। মাদ্রাসার এই নিয়মিত কমিটি’র প্রজ্ঞাপন জারি’র খবরে শিক্ষার্থী-অবিভাবকরা মনগড়া কমিটি’র বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে ডিমলা উপজেলার নির্বাহী অফিসার বরাবর সুষ্ঠু ও নিরপক্ষ তদন্তের জন্য অভিভাবদের পক্ষে আজিমুদ্দিন পিতা আজিজুল ইসলাম একটি লিখিত আবেদন করেন। উপজেলার নির্বাহী অফিসার আবেদন খানা আমলে নিয়ে সুষ্ঠ ও নিরপক্ষ তদন্তের জন্য সহকারী কমিশনার ভুমি ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ইবনুল আবেদীনকে তদন্ত কর্মকর্তা নিযোগ করেন।গত ২৩শে মে তদন্ত কর্মকর্তা অভিযুক্ত মাদ্রাসা পরিদর্শন ও অভিযোগের তদন্ত শুরু করেন।
মাদ্রাসার সুপার হাফিজুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান- এডহক কমিটি নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি সু-সম্পুর্ন করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বরাবর নিয়মিত কমিটি গঠনের আবেদন করে। এ আবেদনের প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার উপজেলার মাদ্যমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুল হালিমকে পিজাইডিং অফিসার হিসাবে নিয়োগ করেন। নিয়োগপ্রাপ্ত পিজাইডিং অফিসার আব্দুল হালিম গত ১০ই মার্চ ২০২২ইং সালে মাদ্রাসার নিয়মিত কমিটি গঠনে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করেন। এরপর পিজাইডিং অফিসার নিয়মিত কমিটি গঠন করেন। অভিযোকারীরা এ নির্বাচনে ২৩৭জন শিক্ষার্থী অভিভাবকে ভোটাধীকার থেকে এবং মাদ্রাসার নিয়মিত পরিচালনা পরিষদের পদ প্রার্থীদের বঞ্চিত করে গত ২৮শে মার্চ ২০২২ইং সালে মাদ্রাসার বিশেষ কক্ষে নির্বাচনী বিধিমাল হরণ করে সিলেকসনের মাধ্যমে ম্যানেজিং কমিটি গঠন করা হয়।
এ অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের অনুলিপি নীলফামারী-১ আসনের সংসদ সদস্য, জেলা শিক্ষা অফিসার, নীলফামারী জেলা রিপোর্টার্স ইউনিটি ও প্রেস ক্লাব নীলফামারী পাঠানো হয়েছে। এর আগে মাদ্রাসার সুপারের বিরুদ্ধে ২০০৭ইং সালে উপবৃত্তি ও টিউশন ফি আত্মসাতের অভিযোগ এনে ডিমলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি লিখিত আবেদন করেন মাদ্রাসার দাতা সদস্য প্রয়াতঃ আলহাজ্ব সাল্টু মিয়ার ছেলে ম্যানেজিং কমিটির সদস্য আবুল কালাম আজাদ।
এ অভিযোগে’র তদন্ত প্রতিবেদনে উপবৃত্তি ও টিউশন ফি’র টাকা আত্বসাতের প্রমান তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে আসে। এই তদন্ত প্রতিবেদনটি ফিমেল সেকেন্ডারী স্কুল এসিসট্রান্স বাজেট দ্বিতীয় পর্যায় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর, শিক্ষা মন্ত্রনালয় ঢাকা বরাবর পাঠায় ভুক্তভোগীরা। উপবৃত্তি প্রকল্প পরিচালক তদন্ত প্রতিবেদনটি আমলে নিয়ে তাকে অভিযুক্ত সুপার হাফিজুর ইসলামের বেতন-ভাতাদী ও সরকারি অংশ প্রদান স্থগিতসহ তার বিরুদ্ধে শাস্তিমুলক ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষ অধিদপ্তররের মাহাপরিচালক বরাবর নতি উপস্থাপন করেন। তার বিরুদ্ধে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনে গড়িমশি করলে অভিযোগকারী আবুল কালাম আাজাদ সুপারের বিরুদ্ধে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মোকদ্দমা নং ০১/২০ দায়ের করেন। মামলাটি বিজ্ঞ আদালত তদন্তের জন্য দুদক রংপুরকে আদেশ দেন। যার স্বরক নং-৯৫২।
অনলাইন ভিত্তিক 71sangbad24.com গণমাধ্যমটি
বাংলাদেশ অনলাইন নিউজ পোর্টাল এসোসিয়েশনে নিবন্ধিত, (আই ডি নং-364)।
বাংলাদেশ তথ্য মন্ত্রনালয়ে জাতীয় নিবন্ধন প্রক্রিয়াধীন।
আগ্রহীগণ সিভি পাঠাতে ই-মেইল করুনঃ info71sangbad24.com@gmail.com