রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:২৫ অপরাহ্ন
জুভেনাইল জুয়েল- কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধিঃ
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় রক্সি পেইন্ট কোম্পানির কুষ্টিয়া অঞ্চলের এরিয়া ম্যানেজার লোকমান হোসেন হত্যার ঘটনায় জড়িত বাবা-ছেলেকে গ্রেপ্তার করেছেন র্যাব-১২-এর কুষ্টিয়া ক্যাম্পের সদস্যরা।
রবিবার ৭ই আগস্ট সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ঢাকার সাভার এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন তারা। সোমবার ৮ই আগস্ট বিকেলে ভেড়ামারা থানা পুলিশের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের চাঁদগ্রামের দক্ষিণ রেলগেট এলাকার মৃত দাউদ খন্দকারের ছেলে দর্পণ আলী(৬১) ও তার ছেলে সোহানুর রহমান সোহান(২২)। দর্পণ আলী দর্পণ হার্ডওয়্যারের মালিক। তার ছেলে তার সঙ্গে কাজ করতেন।
র্যাব-১২-এর কুষ্টিয়া ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার মোহাম্মদ ইলিয়াস খান সংবাদ সম্মেলনে এসব নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান- ভেড়ামারার দর্পণ হার্ডওয়্যারের মালিকের সঙ্গে রক্সি পেইন্ট কোম্পানির বকেয়া ২ লাখ ২৫ হাজার ২০ টাকার চেক সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে লোকমানের মধ্যে সমস্যা তৈরি হয়েছিল। একে কেন্দ্র করে বাবা-ছেলের সঙ্গে লোকমান হোসেনের বাগবিতণ্ডা হয়। পরে পাওনা টাকা আত্মসাৎ করার জন্য তারা ১লা আগস্ট দুপুর ৩টার দিকে লোকমান হোসেনকে দর্পণ হার্ডওয়্যারের মালামাল রাখার গোডাউনে নিয়ে যান। সেখানে নিয়ে লোকমানকে মারপিট, হাতুড়ি দিয়ে মাথায় আঘাত করে ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন।
পরের দিন ২রা আগস্ট দিবাগত রাতে মরদেহটি পলিথিন দিয়ে মুড়িয়ে দর্পণ হার্ডওয়্যারের পাশে ভেড়ামারা সরকারি পাইলট মডেল উচ্চবিদ্যালয়ের গলিতে ফেলে দেওয়া হয়।
এদিকে ২রা আগস্ট ফোন বন্ধ পেয়ে লোকমানের স্ত্রী জিন্নাত আরা টুম্পা ভেড়ামারা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পরের দিন ৩রা আগস্ট সকালে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। টুম্পা বাদী হয়ে সাতজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও চার-পাঁচজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন।
মোহাম্মদ ইলিয়াস খান বলেন- দর্পণ আলী ও তার ছেলে সোহান পাওনা টাকা আত্মসাৎ করার জন্য তাকে হত্যা করেছেন বলে স্বীকার করেছেন। এ মামলায় বাকিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
এ ঘটনায় অন্য আসামিরা হলেন ভেড়ামারা পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের চাঁদগ্রামের দক্ষিণ রেলগেট এলাকার দর্পণ আলীর ছেলে আব্দুল আওয়াল র্যাভেন(২৭) ও সোহানুর রহমান সোহান(২২), একই গ্রামের মৃত দাউদ খন্দকারের ছেলে দর্পণ আলী(৬১), একই উপজেলার কাচারীপাড়া গ্রামের শেরেগুল ইসলামের ছেলে প্রান্ত ইসলাম সাব্বির(২১), একই গ্রামের খা পাড়ার তাহাজ ওরফে বেকার ছেলে শুভ(২৩), মৃতঃ ফরিদ উদ্দিনের ছেলে জীবন(২৬), মিরপুর উপজেলার মশান কবরবাড়ী এলাকার হামিদুল ইসলামের ছেলে তুহিন(২৪)।
নিহত লোকমান হোসেন কুষ্টিয়া শহরের চৌড়হাস ফুলতলা এলাকায় ভাড়া বাড়িতে বসবাস করতেন। তিনি রক্সি পেইন্ট কোম্পানিতে কুষ্টিয়া অঞ্চলের (কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা ও ঝিনাইদাহ) এরিয়া ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।