শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৪০ অপরাহ্ন
শাকিল ইসলাম- ক্রাইম প্রতিনিধি.
নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে পরকীয়া প্রেমের জেরে খালিদ বিন লিশাদকে হত্যা করা হয়েছে বলে আলোচিত সেই হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘটন করেছে পুলিশ।
হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে গত (১৮ নভেম্বর) অভিযান চালিয়ে ঢাকা থেকে দুইজনকে আটক করেছে র্যাব-১৩ এর সিপিসি-২। পরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাব ইন্সপেক্টর (এসআই) মোহাম্মদ আলমগীর সঙ্গীফোর্স নিয়ে আসামীদের ঢাকা থেকে কিশোরগঞ্জ থানায় নিয়ে আসে।
বুধবার (২০ নভেম্বর) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন থানা পুলিশের ভারপধাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফুল ইসলাম। এর আগে তাঁদের দু’জনকে ঢাকার মাহাম্মদপুর থানাধীন কাটাসুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
নিহত লিশাদ মুশা পাকার মাথা সফি মিয়াপাড়া এলাকার মবেদুল হকের ছেলে ও কিশোরগঞ্জ বিএম কলেজ থেকে এবার এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগধহণ করে উত্তীর্ণ হয়েছে বলে জানা যায়। পড়ালেখার পাশাপাশি লিশাদ একটি ক্যাবল অপারেটর (ডিস) কোম্পানিতে লাইন ম্যানের কাজ করছিলেন।
গ্রেফতারকৃত হলেন- ঝালকাঠি জেলার রাজাপুর এলাকার চান্দের হাট বাজারের তাড়াঠেনা এলাকার রুস্তম আলীর ছেলে ওয়াহিদ(৪০) ও তাঁর নীলফামারীর কিশোরগঞ্জের মুশরুত পানিয়াল পুকুর এলাকার আব্দুল হাইয়ের মেয়ে মিনারা খাতুন ওরফে মিনু বেগম(৩০)।
থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, লিশাদ ও মিনারা কিশোরগঞ্জ বি,এম কলেজে একসাথে পড়াশোনা করতো। সেই সুবাদে তাঁদের মাঝে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং প্রায়ই মিনারার বাসা যাওয়া-আসা করতো লিশাদ। সেখান থেকেই গড়ে উঠে প্রেমের সম্পর্ক এবং একাধিকবার শারীরিক সম্পর্কে জড়ান তাঁরা। লিশাদ মিনারাকে বিয়ে করার জন্য চাপ দিতে থাকেন।
মিনারার আগের স্বামী ও তার চেয়ে ১০ বছরের ছোট লিশাদকে বিয়ে করতে অসম্মতি জানায়। পরে লিসাদ মিনারাকে ব্লাকমেইল করে আরও একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক করে। লিশাদের মানসিক ও শারীরিক চাপ নিতে না পারায় লিশাদকে মারার পরিকল্পনা করে মিনারা। পরে লিশাদ গত (৯ নভেম্বর) শনিবার ওয়াজ মাহফিল শুনতে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে মিনারার বাড়িতে যায়।
এসময়ে মিনারা বাড়ির পাশের বাজারের দোকান থেকে ঘুমের ঔষধ কিনে এনে লিশাদকে দুধের সাথে মিশিয়ে খাওয়ায়। এতে লিশাদ অচেতন হয়ে গেলে তাঁকে ঘরের মেঝেতে মাটিচাপা দেন। পরে মিনারা তার বাবাকে সিমেন্ট বালু এনে মাটিচাপা স্থানে ঢালাই দিতে বললে মিনারার বাবা কারণ জানতে চায়। মিনারা তার বাবাকে ঘটনা খুলে বললে মিনারার চাচাতো ভাইয়ের সহায়তায় বাড়ির পাশের নদীতে লিশাদের লাশ ফেলে দেয়। পরে গত (১২ নভেম্বর) (মঙ্গলবার) সকালে উপজেলার নিতাই ইউনিয়নের চাড়াল কাটা নদী থেকে লিশাদের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ বিষয় কিশোরগঞ্জ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) আশরাফুল ইসলাম বলেন, আসামী ওয়াহিদ ও তাঁর স্ত্রী মিনারা আক্তারকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে, আসামি মিনারা আক্তার মিনু লিশাদ খুনের বিষয়ে সত্যতা স্বীকার করেছে। খুনের সাথে জড়িতদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে। মামলার অপর আসামি মিনারার ভাই রব্বানীকে তিন দিনের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।