মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫, ১২:৩৩ পূর্বাহ্ন
শাকিল ইসলাম- ক্রাইম প্রতিনিধি.
নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার ৪নং বাহাগিলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও জাতীয় পার্টির নেতা সুজাউদ্দৌলা লিপটনের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাৎ ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে।
এ নিয়ে রবিবার (১২ জানুয়ারি) বিকালে নীলফামারী জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ইউনিয়ন পরিষদের ১১ জন সদস্য (মেম্বার)। অভিযোগে ওই ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থার প্রস্তাব এনে অপসারণের দাবি জানায় তাঁরা।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ইউপি চেয়ারম্যান সুজাউদ্দৌলা লিপটন জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ন আহবায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। দীর্ঘদিন ধরে ইউপি সদস্যদের তোয়াক্কা না করে বিভিন্ন অনিয়ম ও দূর্নীতি করে আসছেন।
গ্রাম আদালতের বিভিন্ন বিচারিক কার্যক্রম টাকার বিনিময়ে নিজ বাড়িতে মিমাংসা করেন। তিনি জাতীয় পার্টির নেতা হওয়ায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আনদোলনের সময়ে ফ্যাসিষ্ট আওয়ামী লীগের দোসর হিসেবে কাজ করেছেন। ইউপি সদস্যরা নিরুপায় হয়ে স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে সুষ্ঠু বিচার ও তার অপসারণের দাবিতে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগে আরও জানা যায়, ৪নং বাহাগিলী ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের কাবিটা প্রকল্পের দুই লক্ষ নব্বই হাজার টাকা, ৩নং ওয়ার্ডেও কাবিখা প্রকল্পে ২.৫০০ মেট্রিক টন চাল ও টি আর প্রকল্পের দুই লক্ষ চৌদ্দ হাজার টাকা, এইচবিবি প্রকল্পের ইট জমা না করে নিজের বাড়িতে রাখা, ৮নং ওয়ার্ডের কাবিটা প্রকল্কের দুই লক্ষ নব্বই হাজার টাকা, ২০২২-২৪ অর্থবছরের ইউনিয়ন পরিষদের বরাদ্দকৃত অর্থ আত্মসাৎসহ বিভিন্ন ইটের সলিংয়ের রাস্তা পাকাকরণ কাজের ইট তুলে বিক্রি করে পকেটজাতসহ বিভিন্ন প্রকল্পের প্রায় অর্ধকোটি টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ করা হয়। এছাড়াও একাই প্রকল্প দেখিয়ে একাধিক প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ।
২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য স্বপন রানা বলেন, চেয়ারম্যান আমাদের কোন কথা শুনতেন না। তিনি নিজ ইচ্ছে মত সবকিছু করতেন। তিনি কোন নিয়মকানুনের তোয়াক্কা না করে সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের প্রায় অর্ধকোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এখন আমরা তাঁর সুষ্ঠু বিচার ও অপসারণ চাই।
ইউপি’র ৩নং ওয়ার্ডের সদস্য খলিলুর রহমান ডাবলু বলেন, দীর্ঘ ৩ বছর ধরে চেয়ারম্যান কোন ইউপি সদস্যকে মূল্যায়ন না করে নিজের খেয়ালখুশি মত পরিষদ চালাচ্ছেন। পরিষদের বিকল্প হিসেবে নিজ বাড়ীতে করেছেন বিকল্প পরিষদ। আমাদের দাবিদফা নিয়ে এর আগেও চেয়ারম্যানের সাথে একাধিকবার বসা হয়েছিল কিন্তু তিনি কথা দিয়ে কোন কথা রাখেন নি।
আমরা সকল ইউপি সদস্য বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি, আমরা ওই চেয়ারম্যানের অপসারণ চাই। ওনাকে যদি অপসারণ করা না হয় আমরা সকলে মিলে কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলবো। বাহাগিলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সুজাউদ্দৌলা লিপটনকে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করলে তিনি কল রিসিভ করেননি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৌসুমী হক বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, ইউপি সদস্যগণ জেলা প্রশাসক স্যারকেও অভিযোগ দিয়েছেন। স্যার যদি তদন্ত কমিটি করে দেন আমরা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।