শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:০৮ অপরাহ্ন
আনোয়ার হোসেন- কিশোরগঞ্জ(নীলফামারী) প্রতিনিধিঃ
প্রত্যন্ত গ্রামের নাম বাফলা। গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে বিশাল এক জলাধার। গ্রামের নামানুসারে এ বিলের নামকরণ করা হয় বাফলা।
সেখানে ফুঠেছে প্রকৃতির রঙ তুলিতে আঁকা অজস্র নয়নাভিরাম শ্বেত পদ্ম ফুল। এর অবস্থান নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে রনচন্ডি ইউপিতে। প্রায় ৩৫০ বিঘা খাসভুক্ত এ বিলে বছরের বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সৌন্দর্যের মেলা বসে। শীতের শুরুতে বসে পরিযায়ী পাখির মেলা।
ডাহুক, পানকৌড়ি, সরালি, বালিহাঁসের জলকেলিসহ দেশীয় হরেক পাখির ওড়াওড়িতে মাতিয়ে তুলে পুরো বিল এলাকা। এমন মনমুগ্ধকর সবদৃশ্য উদাসি করে তুলে সববয়সি মানুষকে।
বর্ষায় বসেছে শ্বেত পদ্ম। শুধু সৌন্দর্যের বেলাভূমি নয়, বিলের তলদেশে সারা বছর জুড়ে থাকে পানি। শুষ্ক মৌসুমে বিলের পানি কিছুটা শুকিয়ে গেলে সেখানে বোরো আবাদসহ নানা রবি শস্যর পসরা বসে।
বাকি সময় টইটুম্বুর পানিতে ভরা বিলে থাকে হরেক প্রজাতির দেশীয় মাছের প্রাচুর্য। সারা বছর বিলে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন স্থানীয়সহ বিভিন্ন প্রান্তের হাজারো মৎসজীবী।
সরেজমিনে দেখা যায়- বর্ষার শ্রাবণে প্রকৃতিগতভাবে ফুটেছে অজস্র শ্বেত পদ্ম। আর গ্রামবাংলার অকৃত্রিম রুপ ছায়া মায়া সবই যেন ধারণ করে আছে শুভ্রতার প্রতীক এ পদ্ম।
যত দুর চোখ যায় ঐ দুর নীলিমায় সাদা আর সাদার ছড়াছড়ি। দৃষ্টিসীমা ছাপানো সবুজের মিতালিতে সাদা রঙের লাবণ্যর উম্মাদনায় বিলের চার পাশ মিলে মিশে একাকার।এ যেন প্রকৃতির আঁচলে জীবন্ত হয়ে উঠা এক নকশিকাঁথার মাঠ।
এমন মোহনীয়দৃশ্য গ্রামীণ পরিবেশকে এনে দিয়েছে শিল্পেরদ্যোৎনা। ইট, পাথরে চাপা পড়া গ্রামের শিশুরাও ফিরে পেয়েছে উচ্ছল মাখা শৈশব।নিমিষেই মন ছুঁয়ে যাওয়া শ্বেত পদ্মের গালিচা ভ্রমনপিপাসুদের হাতছানি দিয়ে ডাকছে।
আর এ ফুলের আলিঙ্গনে মেতে উঠতে বিভিন্ন প্রান্তের প্রকৃতিপ্রেমীরা ছুটে আসছেন।নৌকা ভাড়া নিয়ে পুরো বিল উপভোগ করছেন তারা।
নৌকার মাঝি বিলপাড়ের বাসিন্দা আপন জানান- বিলের সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য প্রতিনিয়ত নানা শ্রেণী পেশার মানুষ এখানে আসেন। দুর কিংবা কাছে থেকে এ বিলের সৌন্দর্য উপভোগ করেন।অনেকে স্মৃতিরফ্রেমে হন সেলফি বন্দি।
ভাড়া হিসেবে যা নেয়া হয়- সংসারে বাড়তি আয় হয়। সৌন্দর্যের পদ্মে চলে অনেকের জীবন-জীবিকা।
আনোরমারী ডিক্রি কলেজের অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক জানান- এ অপার সম্ভবনাময় স্থানটিকে সরকারীভাবে রক্ষণাবেক্ষন ও দর্শনীয় স্থান ঘোষনা করা হলে অর্থনৈতিক বিশাল খ্যাত সৃষ্টি হবে।
পাল্টে যাবে এলাকার আর্থসামাজিক পেক্ষাপট।শৌচাগার, বসার স্থান না থাকায় দর্শনার্থীদের বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়।
রনচন্ডি ইউপি চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান বিমান বলেন- এ বিলের ঐতিহ্য অতি প্রাচীন। প্রতি বছর এ বিলে ব্যাপক পদ্মের সমাহার ঘটে। শীতে অতিথি পাখির অভয়অরণ্যে পরিনত হয়। এলাকাটি দর্শনীয় স্থান হিসেবে গড়ে তুলতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।