শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৫, ০৩:২২ পূর্বাহ্ন
ডেস্ক সংবাদঃ
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সেমিনারে অনুমোদনহীন সিবিএ নেতাদের উপস্থিতি ও ফুলেল শুভেচ্ছা ঘিরে সমালোচনা উঠেছে। গত ১৬ অক্টোবর ‘কৃষি উন্নয়নে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ভূমিকা: চ্যালেঞ্জ উত্তরণে রোডম্যাপ’ শীর্ষক সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারেক। উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিনতে আলী ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. সাঈদ কুতুব।
এ সময় শ্রম অধিদপ্তরের নিবন্ধিত ট্রেড ইউনিয়ন সংগঠন (বি-৯৮৫) দাবিকৃত অননুমোদিত সভাপতি ফয়েজ আহমেদ (সাবেক পিয়ন) ও সাধারণ সম্পাদক মিরাজ হোসেন অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে সচিব নাজমা মোবারেককে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। এ দুইজনের কোনো বৈধ অনুমোদন না থাকলেও তারা নিজেদের সিবিএ নেতা হিসেবে পরিচয় দেন। এ কারণে বিতর্কের সূত্রপাত ঘটে।
ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, তারা দুজনই কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের (সিবিএ) বৈধ সভাপতি আব্দুল হালিম হত্যা মামলার আসামি, যারা বর্তমানে অস্থায়ী জামিনে মুক্ত আছেন।
নিহত আব্দুল হালিম ছিলেন চট্টগ্রামের বোয়ালখালীর বাসিন্দা ও কৃষি ব্যাংকের সাবেক কর্মচারী। মতিঝিল থানার এসআই সজীব কুমার সিংয়ের সুরতহাল প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, সহকর্মীদের সঙ্গে বিরোধের জেরে ধস্তাধস্তির পর গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক সিবিএর সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহামেদ জানান, হালিম ভাই ২০১৪ সালে নির্বাচিত সভাপতি ছিলেন, আমি সাধারণ সম্পাদক। এরপর আর কোনো নির্বাচন হয়নি। গত ৫ আগস্ট ফয়েজ ও মিরাজ নিজেদের সভাপতি-সম্পাদক ঘোষণা দিয়ে জোরপূর্বক অফিস দখল করে নেয়।
তিনি আরও বলেন, আমরা শ্রম আদালত ও থানায় মামলা করেছি, আদালত ইতিমধ্যে তাদের নোটিশ দিয়েছে। হালিম ভাইকে আগেও তারা হুমকি দিয়েছিল।
নাসিমের দাবি, এর নেপথ্যে রয়েছেন কৃষি ব্যাংকের এইচআরএমডি বিভাগের ডিজিএম জাহিদ হোসেন, ডিজিএম লিয়াকত আলী, এবং পর্ষদ সচিবালয়ের ডিজিএম হাবিব উন নবী। তারা নাকি সিন্ডিকেট গড়ে বদলি, পদোন্নতি ও টেন্ডার বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মহাব্যবস্থাপক বলেন, সিবিএ কোনোভাবেই এমন সেমিনারে যোগ দেওয়ার এখতিয়ার রাখে না। এ ঘটনায় আমরা বিব্রত ও প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছি।
ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আশা প্রকাশ করেছেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে সুশাসন, পেশাদারত্ব ও সিন্ডিকেটমুক্ত পরিবেশ উপহার দেবেন।