শুক্রবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:২৮ পূর্বাহ্ন
খলিলুর রহমান- নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
রংপুরের তারাগঞ্জে গণপিটুনিতে জামাই-শ্বশুর নিহতের ঘটনায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ ঘটনার সময় উপস্থিত দুই এসআই সহ ৬ পুলিশ কনস্টেবলকে দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগে তারাগঞ্জ থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। রংপুর জেলা পুলিশ সুপার(এসপি) আবু সাইম তাদের প্রত্যাহারে বিষয়টি নিশ্চত করেছেন।
প্রত্যাহার হওয়া দুই এসআই হলেন- এসআই আবু জোবায়ের ও এসআই সফিকুল ইসলাম এবং ৬ কনস্টেবল হচ্ছেন- ফিরোজ কবির, মোক্তার হোসেন, বাবুল চন্দ্র রায়, ফারিকিত আখতার জামান, ধিরাজ কুমার রায়, হাসান আলী। তাঁরা সকলে রুপলাল দাস ও প্রদীপ দাসকে মারপিটের সময় উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও তাঁদের উদ্ধার না করে ক্ষুব্ধ জনতার হাতে রেখে সরে আসেন। রুপলাল দাসের স্ত্রীর দায়ের করা হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আবু জোবায়ের এর পরিবর্তে ওসি তদন্ত রফিকুল ইসলামকে তদন্তকারী কর্মকর্তার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য যে- গত শনিবার রাত ৯টার দিকে তারাগঞ্জের সয়ার ইউনিয়নের বটতলা এলাকায় গণপিটুনিতে নিহত হন উপজেলার ঘনিরাপুর এলাকার রুপলাল দাস। একই ঘটনায় নিহত হন তাঁর ভাগনির স্বামী প্রদীপ লাল (৩৫)। প্রদীপের বাড়ি মিঠাপুকুর উপজেলার বালুয়াভাটা গ্রামে। রূপলাল স্থানীয় বাজারে জুতা সেলাই করতেন।
তথ্য সূত্রে, চোর সন্দেহে জনতার গণপিটুনির খবর পেয়ে সেখানে এসআই জোবায়ের ও সফিকুলসহ কনস্টেবলরা বুড়িরহাট মাঠে যান। কিন্তু তাঁরা রুপলাল ও প্রদীপ দাসকে উদ্ধার না করে উত্তেজিত জনতার কাছে রেখে সরে যান। তখনও রুপলাল দাস ও প্রদীপ দাস জীবিত ছিলেন। অবশেষে উত্তেজিত জনতার পিটুনিতে তাঁরা অচেতন হয়ে পড়ে। পরে প্রায় এক ঘন্টা পর পুলিশ ও সেনাবাহিনীর তিনটি গাড়ি সেখানে গেলে, বুড়িরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠ থেকে অচেতন অবস্থায় তাঁদের উদ্ধার করে রাত ১১টায় তারাগঞ্জ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক রুপলালকে মৃত্যু ঘোষণা করেন। প্রদীপ দাসের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়, ভোর ৪টায় সেখানে তিনিও মারা যান।
এ ঘটনায় পরদিন রোববার রুপলালের স্ত্রী ৫০০ থেকে ৭০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে থানায় মামলা করেন। গণপিটুনিতে জামাই-শ্বশুর নিহতের ঘটনায় পরের দিন রাতে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ চারজনকে গ্রেপ্তার করে।
রংপুরের পুলিশ সুপার আবু সাইম কালবেলাকে বলেন, দুই এসআই সহ ৮ পুলিশ সদস্যকে আমরা প্রত্যাহার করেছি, সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। একটা তদন্ত কমিটি করা দেয়া হয়েছে, তাদের কোন গাফিলতি আছে কি-না তা যাচাই করার জন্য।