শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:২৩ অপরাহ্ন
নাসির উদ্দিন শাহ্- নীলফামারী জেলা প্রতিনিধিঃ
নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার বঙ্গবন্ধু কালিগঞ্জ বাজারে অবস্থিত বদ্ধভূমি, মুক্তিযুদ্ধের যাদুঘর ও শহিদ মিনার রক্ষা করে তিস্তা সেচ ক্যানেলের উপর ফোর লেনের ব্রীজ নির্মানের দাবি জানিয়েছেন বীরমুক্তিযোদ্ধাসহ স্থানীয়রা। সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, জলঢাকা উপজেলা হতে কালিগঞ্জ বাজার দিয়ে ডিমলা যাওয়ার পথিমধ্যে তিস্তা সেচ ক্যানেলের উপর ফোর লেনের একটি ব্রীজ নির্মাণ করবে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
এটি নিয়ে একটি প্রাথমিক সার্ভে করেছে পওর কর্তৃপক্ষ। সার্ভে অনুযায়ী ডিমলা অভিমুখি বর্তমানে যে ছোট ব্রীজটি রয়েছে সেটির বামদিকে ফোর লেনের ব্রীজটি নির্মাণ করার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং সে অনুযায়ী মাটি পরীক্ষা ও ম্যাপও তৈরি করা হয়। বামদিকে ফোর লেনের নতুন ব্রীজটি নির্মাণ করা হলে বদ্ধভূমি, মুক্তিযুদ্ধের যাদুঘর ও শহিদ মিনার রয়েছে সেগুলো ভাঙ্গার হাত থেকে রক্ষা পাবে। এছাড়াও বাজারের উপর যে বড় বাকটি রয়েছে সেটিও সোজা হয়ে যাবে। যার ফলে দূর্ঘটনা কমে আসবে।
কিন্তু কিছু স্বার্থান্বেষী ব্যক্তি নিজেদের স্বার্থ হাসিল করার জন্য বর্তমানে ডিমলা অভিমুখি ছোট ব্রীজের ডানদিকে ব্রীজ নির্মাণ করার জন্য প্রকৌশলীকে প্রভাবিত করে ফোর লেনের ব্রীজ নির্মাণের ম্যাপ পরিবর্তন করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। ডানদিকে ফোর লেনের ব্রীজ নির্মাণ করা হলে কালিগঞ্জ সড়কে পাশে অবস্থিত বদ্ধভূমি, মুক্তিযুদ্ধের যাদুঘর ও শহিদ মিনার আংশিক ভাঙ্গা পড়বে। এছাড়াও কালিগঞ্জ বাজারের মধ্য দিয়ে যাওয়া মূল সড়কটির বাক থেকেই যাবে। যার ফলে দূর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থেকেই যাবে বলে জানান স্থানীয়রা।
ওই এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা কাছুরাম রায় বলেন, ব্রীজটি বামদিকে নির্মাণ করা হলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান কমে আসবে। বাজারের উপর যে বাকটি রয়েছে সেটি সোজা হয়ে যাবে এবং দূর্ঘটনাও কমে যাবে।
আরেক বাসিন্দা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, কালিগঞ্জ বাজারের যে বদ্ধভূমি আছে সেখান থেকে বর্তমানে যে ছোট ব্রীজটি রয়েছে সেটি পর্যন্ত প্রায় ৭০ ডিগ্রির মত একটি বাক রয়েছে। বাজারের উপর দিয়ে এই বড় বাকটি থাকার ফলে প্রায়শই দূর্ঘটনা ঘটে। তাই এই বাকটি সোজা করে ডিমলা অভিমুখে বর্তমানে যে ছোট ব্রীজটি রয়েছে তার বাম দিকে ফোর লেনের ব্রীজ নির্মাণ করার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড সার্ভে করে মাটি পরীক্ষা ও ম্যাপ ও তৈরি করে। কিন্তু অজানা কারণে আবারও ম্যাপটি পরিবর্তন করে ছোট ব্রীজটির ডান দিকে ফোর লেনের ব্রীজ তৈরির পরিকল্পনা চালানো হচ্ছে। যার ফলে কালিগঞ্জ সড়কে পাশে অবস্থিত বদ্ধভূমি, মুক্তিযুদ্ধের যাদুঘর ও শহিদ মিনার আংশিক ভেঙ্গে যাবে।’
জলঢাকা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাংগঠনিক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সাত্তার বলেন, ডিমলা অভিমুখে বর্তমানে যে ছোট ব্রীজটি রয়েছে তার বামদিকে ফোর লেনের ব্রীজ নির্মাণ করা হলে শহীদদের স্বরণে নির্মিত বদ্ধভূমি, মুক্তিযুদ্ধের যাদুঘর ও শহিদ মিনারের কোনো ক্ষতি হবে না। ডানদিকে ফোর লেনের বড় ব্রীজ নির্মাণ করা হলে বদ্ধভূমি, মুক্তিযুদ্ধের যাদুঘর ও শহিদ মিনার ভাঙ্গা পড়বে। যেটি আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে কখনই হতে দিবো না। তাই আমাদের দাবি ব্রীজটি যেন বাম দিকে নির্মাণ করা হয়। এতে বাজারের বড় বাকটি সোজা হয়ে যাবে দূর্ঘটনাও কমবে।
জানতে চাইলে নীলফামারী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আতিকুর রহমান বলেন,আমরা বদ্ধভূমি ও মসজিদে যাতে দুটোই সুরক্ষিত থাকে সে অনুযায়ী একটি ম্যাপ তৈরি করে আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রেরণ করেছি। তারা যেটা চূড়ান্ত করবে সে অনুযায়ী ব্রীজ নির্মাণ করা হবে। সর্বোপরি জনস্বার্থে যেটা করলে ভালো হবে সেটাই বাস্তবায়িত হবে বলে আশা করছি।