মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:২৬ অপরাহ্ন
হারুন-অর-রশিদ- বিশেষ প্রতিনিধিঃ
রংপুরের পীরগাছা উপজেলার ১নং কল্যাণী ইউনিয়নস্থ বড়দরগাহ বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালতের ভয় দেখিয়ে ট্রেড লাইসেন্স বিক্রির অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের বিরুদ্ধে।
বড়দরগাহ বাজারের একাধিক ব্যবসায়ী অভিযোগ করে বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালানোর পর থেকেই, বর্তমান সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার ষড়যন্ত্র করছে পলাতক ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুর আলম। তার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে গত ১০ অক্টোবর ২০২৪ইং সন্ধ্যার পরে বাজারের বিভিন্ন স্থানে মাইকিং করে ইউনিয়ন পরিষদ কতৃপক্ষ।
মাইকিংয়ে বাজারের ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে বলা হয়, আগামী ১৪/১০/২০২৪ইং সোমবারের মধ্যে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ট্রেড লাইসেন্স করতে হবে। কোন ব্যবসায়ীর ইউনিয়ন পরিষদের ট্রেড লাইসেন্স না থাকায় ভ্রাম্যমান আদালত কতৃক জেলা জরিমানার শিকার হইলে, কল্যাণী ইউনিয়ন পরিষদ দায়ী থাকিবেনা। এবং যথা তারিখে ইউনিয়ন পরিষদের হিসাব রক্ষক আবু সাঈদ, ১,নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য আমজাদ হোসেন, ৩নং নেছার আহমেদ, ৪নং হুমায়ুন কবির, ৬নং মঞ্জু মিয়া, ৮নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য টাকুয়া শফিকুল, ৭,৮,৯ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য হাসি বেগম। বাজারের ব্যবসায়ীদের মোবাইল কোর্টে জরিমানার ভয় দেখিয়ে ট্রেড লাইসেন্স বিক্রি করেন। সে সময় তাদের নিকট ইউপি চেয়ারম্যান ও হিসাব রক্ষক স্বাক্ষরিত ৪টি ট্রেড লাইসেন্স এর বহি দেখা যায়।
বাজারের ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, গত ৫ আগষ্ট ছাত্রজনতার তোপের মুখে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালানোর পর থেকেই লাপাত্তা ইউপি চেয়ারম্যান নুর আলম। একাধিক হত্যা মামলার আসামি এই নুর আলম, আওয়ামী শাসনামলে হাট বাজারের উন্নয়ন বরাদ্দের সমস্ত টাকা ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে নিজের পকেটে ভরেছেন। এছাড়াও অসংখ্য মানুষকে চাকুরী দেয়ার নাম করে, লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
রংপুর ৪ আসনের (কাউনিয়া পীরগাছা) সাবেক অবৈধ এমপি টিপু মুন্সির আস্থাভাজন হবার সুবাদে উপজেলা প্রশাসনকে ম্যানেজ করে, ইউনিয়নের উন্নয়ন বরাদ্দের কোটি টাকা লোপাট করেছে। দেশের মানুষ যখন ইউনিয়ন পরিষদ ভেঙ্গে দেয়ার পক্ষে কথা বলছে, সেই মুহুর্তে মেম্বার চেয়ারম্যানরা ট্রেড লাইসেন্স বিক্রির অর্থ হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টায় মত্ত। আমরা কতৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে অনুরোধ করছি, দ্রুত এই দূর্ণীতিবাজ অবৈধ ইউপি চেয়ারম্যানকে আইনের আওতায় এনে বিচার করতে হবে।
ব্যবসায়ী আব্দুস সোবহান গণমাধ্যমকে বলেন, বাজারের দোকানদার সাথে কোন প্রকার মতবিনিময় ছাড়াই ইউনিয়ন পরিষদ মাইকিং করে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার হুমকি দিচ্ছে। আওয়ামী লীগ একদিকে যেমন গুজব ছড়াচ্ছে, অন্যদিকে ট্রেড লাইসেন্স বিক্রির অর্থ হাতিয়ে নেয়ার পায়তারা করছে। আমরা শুধু ট্রেড লাইসেন্স নয় বর্তমান সরকারকে সব ধরনের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত আছি। তবে নুর আলমের মতো দুর্বৃত্তদের হাতে একটি টাকাও দিতে রাজি নই। সাধারণ ব্যবসায়ীরা জেলা প্রশাসক রংপুরের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, গত ৫ আগষ্টের পর থেকে এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে নুর আলম। যতদ্রুত সম্ভব এই দূর্ণীতিবাজ ইউপি চেয়ারম্যানকে বিচারের মুখোমুখি করুন।
মোবাইল কোর্টের ভয় দেখিয়ে ট্রেড লাইসেন্স বিক্রির বিষয় জানতে চাইলে, জেলা প্রশাসক রংপুর মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল গণমাধ্যমকে বলেন, মোবাইল কোর্টের ভয় দেখিয়ে ট্রেড লাইসেন্স বিক্রির কোন নিয়ম নেই। তিনি আরও বলেন, পীরগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কে উপজেলায় সবধরনের অপতৎপরতা বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিবেন।