মঙ্গলবার, ০৮ Jul ২০২৫, ০৪:১২ অপরাহ্ন
রবিন চৌধুরী- রংপুর জেলা প্রতিনিধিঃ
রংপুরে জামায়াতে ইসলামীর বিভাগীয় জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে আমরা বহু ধরনের ষড়যন্ত্রের কথা শুনতে পাচ্ছি, বহু ধরনের কথা ময়দানে শুনতে পাচ্ছি। বহু ধরনের ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের আলামত বুঝতে পারছি। আমরা সবাইকে স্মরণ করিয়ে দেই- এই শেখ হাসিনা, তার হাতে সকল বাহিনী ছিল। দোর্দণ্ড প্রতাপ ছিল, জায়গায় জায়গায় নিজের লোক বসিয়েছিল। মান্তানদের দিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করেছিল। কিন্তু যখন জনগণের জাগরণ, জনগণের বিস্ফোরণ হয়েছে, তখন কি তাকে আর কেউ রক্ষা করতে পেরেছে? তাহলে যেই জনগণ এতো মূল্য দিয়ে একটা পরিবর্তন এনেছে, সেই জনগণ আরেকটা ফ্যাসিবাদ কায়েম করতে দেবে না ইনশাআল্লাহ।
শুক্রবার (৪ জুলাই) দুপুরে রংপুর জিলা স্কুল মাঠে জামায়াতে ইসলামীর বিভাগীয় জনসভাস্থলে কথা বলেন নজির উদ্দিনসহ আরও অনেকে। জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের সব খুনির বিচার, প্রয়োজনীয় সব সংস্কারের পর নির্বাচনসহ চার দফা দাবিতে এই জনসভার আয়োজন করেছে জামায়াতে ইসলামীর রংপুর মহানগরী ও জেলা শাখা।
দীর্ঘ ১৭ বছর পর রংপুরে অনুষ্ঠিত এই জনসভা বিকেল ৩টায় শুরু হওয়ার কথা থাকলেও জুমার নামাজের পরই সভার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকদের সমাগমে কানায় কানায় পূর্ণ হয়েছিল রংপুর জিলা স্কুল মাঠ। লোকসমাগম মাঠ ছেড়ে উপচে পড়েছিল সড়কগুলো। মৃদু দাবদাহ উপেক্ষা করে রংপুরসহ আশপাশের জেলা ও উপজেলা থেকে আসা বিভিন্ন পর্যায়ের দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকরা সরব উপস্থিতিতে শুরু হওয়া এই জনসভায় নারীদের জন্য বক্তব্য শোনার ব্যবস্থা রয়েছে। জনসভায় জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদ ও আহত যোদ্ধা এবং তাদের পরিবারের সদস্যরাও উপস্থিত হয়েছে। আছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ।
এদিকে সকাল থেকেই বিভিন্ন স্লোগানে জনসভাস্থল মুখরিত হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে ‘আল্লাহর আইন চাই, সৎ লোকের শাসন চাই’ স্লোগানে প্রকম্পিত হচ্ছে জিলা স্কুল মাঠ। দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকরা এই স্লোগানের পাশাপাশি সংস্কার ও বিচারের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্লোগান দিচ্ছেন। তারা হাতে বাংলাদেশের জাতীয় ও দলীয় পতাকার পাশাপাশি মাথায় লাল-সবুজের পতাকা বেঁধেছেন। দলীয় প্রতীক দাঁড়িপাল্লায় ছেয়ে গেছে পুরো মাঠ।
দুপুর ২টার দিকে বিভাগীয় নেতাদের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে জনসভার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। এর আগে সকাল থেকেই মঞ্চে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের শিল্পীরা হামদ-নাত ও ইসলামী সংগীত পরিবেশন করেন। রংপুর বিভাগের আট জেলার নেতৃবৃন্দ ছাড়াও ইসলামী ছাত্রশিবির ও জামায়াতে ইসলামীর সহযোগী সংগঠনের নেতারা বক্তব্য দিয়েছেন।
বিভাগীয় এই জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। এতে প্রধান বক্তা সদ্য কারামুক্ত কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য এটিএম আজহারুল ইসলাম।
বিশেষ বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, মাওলানা আব্দুল হালিম, ঢাকা দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল, উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা মমতাজ উদ্দিন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান। এছাড়াও জামায়াতের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা বক্তব্য দেন জনসভায়।