বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:৪১ পূর্বাহ্ন
হারুন-অর-রশিদ বাবু- বিশেষ প্রতিনিধি.
রংপুর জেলা মটর শ্রমিক ইউনিয়নের বিগত কমিটিকে বিলুপ্ত করে, ৯সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি গঠন সম্পন্ন হয়েছে। বুধবার (৪ ডিসেম্বর) ২০২৪ইং রংপুর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে সাধারণ সভার মাধ্যমে পূর্বের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে সেইসাথে শ্রমিক নেতা মো. তাজমুল ইসলাম হারুন চৌধুরীকে আহবায়ক করে নয় সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করা হয়।
রংপুর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের জেলা মটর শ্রমিক ইউনিয়নের প্রধান কার্যালয়ের মুল ফটকে অনুষ্ঠিত সাধারণ সভায়, পরিবহন শ্রমিক উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চল পরিচালক অধ্যাপক আবুল হাশেম বাদল এই কমিটি ঘোষণা দেন। এতে মো. তাজমুল ইসলাম হারুন চৌধুরীকে আহ্বায়ক এবং মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম জাদু, রুহুল আমিন, সাজ্জাদ হোসেন, ওয়ারেস আলী, আজম আলী, জাহিদুল ইসলাম, নুরুল আলম সিদ্দিকী ও মামুনুর রশীদকে সদস্য করে কমিটি ঘোষণা করা হয়।
এসময় শ্রমিক উপদেষ্টা, আবুল হাশেম বাদল নব-গঠিত কমিটি এবং সাধারণ শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, নেতাদের সাধারণ শ্রমিকদের সাথে আন্তরিকতা পুর্ন সম্পর্ক হতে হবে। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে গঠিত কমিটির মতো কোন শ্রমিক যেন নির্যাতনের শিকার না হয়।
তিনি হাসিদের কথা উল্লেখ করে বলেন, পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ শ্রমিক নেতা ছিলেন নবী মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (সা.)। শ্রমিকদের ব্যাপারে নবী বলেছেন শ্রমিকের গায়ের ঘাম শুকানোর আগে তার মজুরী পরিশোধ করতে হবে। কিন্তু আজ আর শ্রমিকদের তেমন মর্যাদা দেয়া হয়না। আমরা আজকের এই আহবায়ক কমিটির উদ্দেশ্যে বলবো আপনারা দায়িত্ব পালনে শ্রমিকদের ব্যাপারে আন্তরিক হবেন।
নব-নির্বাচিত কমিটির আহবায়ক, মো. তাজমুল ইসলাম হারুন চৌধুরী সাধারণ সভায় উপস্থিত হাজারো শ্রমিককে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন পুর্বক বলেন, আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের মদদ পুষ্ট, রংপুরের শীর্ষ সন্ত্রাসী, ৭/৮টি হত্যা মামলার আসামি আব্দুল মজিদের সময় আমরা সকলেই শ্রমিকের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত ছিলাম। দীর্ঘ ১৬ বছর যাবত কার্যকরী পরিষদের নেতৃবৃন্দ ইউনিয়নের অর্থ লুট করে নিজে বাড়ি, ৪-৫ খানা কোচের মালিক হয়েছে। শ্রমিকের অর্থ প্রদান না করে নিজের স্বার্থ চরিতার্থ করেছে। বিগত ১৬ বছরে সাধারণ সভা গুলোতে শাহজাহান খান, টিপু মুন্সী, আশিকুর রহমান, ডিউক চৌধুরী, ডালিয়া সং সাবেক এমপি/মন্ত্রী এবং ওসমান আলী সহ সকলেই কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে ত্রি-বার্ষিক সাধারণ সভায় সাধারণ শ্রমিকদের কথা বলার অধিকার হরণ করেছে।
তিনি আরও বলেন ইতিপূর্বে আমি ৩ বার সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হওয়ার পরেও পরাজিত প্রার্থী আব্দুল মজিদকে (বর্তমান পলাতক) নির্বাচিত ঘোষণা করে ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগ সরকার। এছাড়াও কার্যকরী সভাপতি পদে নজরুল ইসলাম যাদু নির্বাচিত হওয়ার পরও তার স্থলে এম এ মজিদের ছোট ভাই আ. আজিজকে ভোট ছাড়াই কার্যকরী সভাপতি পদে নিয়োগ দেয়া হয়।
এই মজিদ গং প্রায় ১১’শ পরিবহনে কর্মরত শ্রমিকদের পরিচয়পত্র প্রদান না করে, মহানগর শ্রমিক লীগের ৩৩টি ওয়ার্ড শাখা কমিটিকে অবৈধভাবে ৩ হাজার পরিচয়পত্র প্রদান করেছে। এই সমস্ত পরিচয়পত্রধারী ব্যক্তিগণ বিভিন্ন পরিবহনে যাতায়াতের সময় পরিচয়পত্র দেখিয়ে ভাড়া দিতে অস্বীকার করে এবং কর্মরত শ্রমিকদের সঙ্গে ঝগড়া বিবাদে জড়িয়ে পড়ে। ফলে মালিক ও শ্রমিকগণ আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রন্থ হন। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম। বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যান ফেডারেশন রংপুর মহানগরের সভাপতি শরীফুল ইসলাম প্রমুখ।