রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৩:০০ অপরাহ্ন

সর্বশেষ সংবাদঃ
অনলাইন ভিত্তিক গণমাধ্যম “৭১সংবাদ২৪.কম” এ প্রতিনিধি আহ্বান করা হয়েছে। আগ্রহীগণ জিবনবৃত্তান্ত পাঠাতে 71sangbad24.com@gmail.com -এ মেইল করুন
সংবাদ শিরোনামঃ
পুঠিয়া কান্দ্রা কলাবাগান থেকে এক ভ্যান চালকের মরদেহ উদ্ধার র‌্যাব-১৩ এর অভিযানে দিনাজপুরে গাঁজাসহ গ্রেফতার ২ ছেলের চুরির অভিযোগে বাবাকে কুপিয়ে হত্যা গ্রেফতার-৫ নড়াইলে মোটরসাইকেল ও ট্রলির মুখোমুখি সংঘর্ষ লক্ষ্মীপুরে নজরুলের ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকীতে সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত সাংবাদিকতার শুদ্ধ চর্চায় অঙ্গীকারবদ্ধ পীরগাছা প্রেসক্লাব রংপুরে “জুলাই অভ্যুত্থান ও শ্রমজীবীদের হিস্যা” শীর্ষক আলোচনা দুর্গাপূজা সুষ্ঠুভাবে উদযাপন করা হবে- সহকারী পুলিশ সুপার ধুনটে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন নড়াইলের নবাগত পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম “প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ” র‍্যাব-১১ এর অভিযানে কুমিল্লায় ইয়াবা সহ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার নীলফামারীতে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ফ্রী মেডিকেল ক্যাম্প ফুলবাড়ীতে আবাসিক হোটেলে চলছে অনৈতিক কর্মকান্ড নড়াইলে ডিবি পুলিশের অভিযানে ইয়াবা সহ গ্রেফতার ১ ফুলবাড়ীতে গাছের চারা বিতরণ বয়স ৭০, রিকশার প্যাডেলে তার জীবনযুদ্ধ খুন হওয়া ইরফানের পিতাকে তারাগ‌ঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের ভ্যান প্রদান জাতীয়তাবাদী ফোরাম বিএনপির কোন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন নয় আগাছা নাশক স্প্রে করে জমির ফসল নষ্ট করার অভিযোগ

মানিক বাহিনীর হামলায় নিহত শফিকুল- স্বজনদের বিচার দাবি

হারুন-অর-রশিদ বাবু- বিশেষ প্রতিনিধিঃ
রংপুরের বদরগঞ্জে দোকানঘর নিয়ে বিরোধের জেরে স্থানীয় চেয়ারম্যান শহিদুল হক মানিকের অনুসারী ‘মানিক বাহিনীর’ হামলায় গুরুতর আহত শফিকুল ইসলাম অবশেষে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। মৃত্যুর পর শনিবার দুপুরে বাবার লাশ নিয়ে বিচার চেয়ে শহীদ মিনারে দাঁড়ান তার ছেলে-মেয়েরা। এ সময় কান্নাজড়িত কণ্ঠে তাঁরা বলেন, আমাদের বাবাকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে, অথচ খুনিরা জামিনে ঘুরে বেড়াচ্ছে! নিহত শফিকুল ইসলাম (৫২) বদরগঞ্জ উপজেলার কাঁচাবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা ও বিএনপির সমর্থক। তিনি জেলা বিএনপির সহসভাপতি ও সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী সরকারের অনুসারী ছিলেন।

গত ৫ এপ্রিল বদরগঞ্জ বাজারে এক দোকানে বসে থাকার সময় চেয়ারম্যান শহিদুল হক মানিক, তাঁর ছেলে তানভীর আহমেদ তমাল ও সহযোগীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় বলে অভিযোগ পরিবারের। ঘটনাস্থলেই মারা যান সমাজকল্যাণ সম্পাদক লাভলু মিয়া। গুরুতর আহত অবস্থায় শফিকুলকে ভর্তি করা হয় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।

দীর্ঘদিন চিকিৎসার পর তিনি শুক্রবার (২৫ জুলাই) শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। শনিবার দুপুরে নিহতের লাশ অ্যাম্বুলেন্সে করে বদরগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন পরিবার ও স্বজনরা। নিহতের মেয়ে মিম আক্তার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “আমার বাবা হাসপাতালের বিছানায় চার মাস কষ্ট করে মারা গেলেন, আর যারা কুপিয়ে মারল তারা বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমরা ন্যায়বিচার চাই।

বিচারের দাবিতে শহীদ মিনারে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন নিহত শফিকুল ইসলামের ভাই শফিয়ার রহমান, একই ঘটনায় নিহত বিএনপি নেতা লাভলু মিয়ার ছেলে রায়হান কবির, রংপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপির বহিস্কৃত নেতা মোহাম্মদ আলী সরকার, উপজেলা বিএনপির বহিষ্কৃত যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির মানিক, উপজেলা শ্রমিক দলের সাবেক সভাপতি আবু জর গিফারি মন্টু এবং পৌর যুবদলের বহিষ্কৃত ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক সুমন সরদার। কর্মসূচিতে নিহতের পরিবারের সদস্য, প্রতিবেশী এবং স্থানীয় রাজনৈতিক কর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় মোহাম্মদ আলী সরকার বলেন, ঘটনার দিন পুলিশকে বারবার ফোন দিলেও তারা আসেনি। লোক মারা যাবার পর তারা এসেছে। সন্ত্রাসী মানিক ও তার বাহিনীর হাতে দুজন লোক খুন হয়েছে। পুলিশ যদি ব্যবস্থা না নেয় তাহলে জনগনকে সাথে নিয়ে যা করার আমরা করব। আমি সারাজীবন অন্যায়ের বিপক্ষে ছিলাম।

জানা গেছে, বদরগঞ্জ পৌর শহরের শহীদ মিনার এলাকায় একটি দোকান ঘর নিয়ে ভাড়াটিয়া ও মালিকপক্ষের মধ্যে ঝামেলা তৈরী হয়। এটি নিয়ে সমাধানের চেষ্টা হলেও হামলা ও দোকানপাট লুটের অভিযোগ তুলে ৫ এপ্রিল মানববন্ধনের ডাক দেন দোকানের ভাড়াটিয়া জাহিদুল ইসলাম।

এ ঘটনায় এর আগের দিন স্থানীয় সাবেক সাংসদ ও জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মোহাম্মদ আলী সরকারের বিরুদ্ধে ফেসবুকে বিদ্বেষ মূলক পোস্ট দেন কালুপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহিদুল হক মানিকের ছেলে ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা তানভীর আহমেদ তমাল। ৫ এপ্রিল দুপুরে বদরগঞ্জ বাজারের এক দোকানে বসে পান খাচ্ছিলেন শফিকুল ও মধুপুর বিএনপির সমাজকল্যাণ সম্পাদক লাভলু মিয়া। তারা দুজনই মোহাম্মাদ আলী সরকারের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

নিহত পরিবারের অভিযোগ, হঠাৎই সেখানে হাজির হয় ‘মানিক বাহিনী’ চেয়ারম্যান শহিদুল হক মানিক, তাঁর ছেলে তানভীর আহমেদ, ফিরোজ ওরফে ‘মার্ডার ফিরোজ’সহ কয়েকজন। ধারালো অস্ত্র দিয়ে দুজনের মাথায় ও গায়ে এলোপাতাড়ি কোপায় তারা। ঘটনাস্থলেই মারা যান বিএনপি নেতা লাভলু মিয়া। শফিকুল তখন গুরুতর অবস্থায় ভর্তি হন রমেকে।

এ ঘটনায় নিহত বিএনপি নেতা লাভলু মিয়ার ছেলে রায়হান কবির বাদী হয়ে পরদিন, ৬ এপ্রিল বদরগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় কালুপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল হক মানিক, তার ছেলে তানভীর আহমেদ তমালসহ ১২ জনের নাম উল্লেখ করা হয়।

এছাড়া একই ঘটনার আরেকটি ধারায় হামলার অভিযোগে দোকান মালিক ইশতিয়াক বাবুর বোনের স্বামী মনিরুজ্জামান বাদী হয়ে থানায় আরেকটি মামলা করেন। দুই মামলায় কয়েকজন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হলেও মূল অভিযুক্ত চেয়ারম্যান মানিক, তার ছেলে তমালসহ কয়েকজন উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন।

বদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম আতিকুর রহমান বলেন, ঘটনার পর দুটি মামলা হয়েছে। আহত শফিকুল ইসলাম চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। সুষ্ঠু তদন্ত করে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করব।

সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

©2019 copy right. All rights reserved 71sangbad24.com
Design & Developed BY Hostitbd.Com