শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৫৪ অপরাহ্ন
আবীর আকাশ- লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধিঃ
সারাদেশে প্রশ্নপত্র ফাঁসের ১৭ জন হোতার মধ্যে জড়িত থাকার অপরাধে গ্রেপ্তার হন লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার সাবেক সেনা সদস্য মো. নোমান সিদ্দিকী। বিয়ের পর থেকে অপকর্মে জড়ান এমন দাবি পরিবার ও এলাকাবাসীর। তিনি সবসময় স্ত্রীর কথায় চলেন বলেও জানায় এলাকাবাসী।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, নোমান সিদ্দিকী উপজেলার চর মেহের আজিজিয়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৯৬ সালে এসএসসি পাশ করে ১৯৯৮ সালে সেনাবাহিনীতে সাধারণ সৈনিক হিসেবে যোগদান করেন। ১৯ বছর চাকরি জীবনে লাইবেরিয়ান মিশন শেষ করেন। এবং চাকরি থেকে অবসরে যান।
২০০৭ সালে পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলা শহরের ওয়াবদা (বিদ্যুৎ) কর্মকর্তা শাহাব উদ্দিনের মেয়ে সাফিয়া সুলতানা স্বর্নাকে বিয়ে করেন। স্ত্রী সাফিয়া সুলতানা স্বর্না ঢাকার মিরপুরে শিক্ষা অধিদপ্তরে চাকরি করতেন। তিনিও চাকরি ছেড়ে দেন। বিয়ের পর থেকে পরিবারের কারো সাথে তার সম্পর্ক ছিল না। স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে ঢাকায় বসবাস করতেন।
জানা যায়, নোমান যা কিছু করেছেন সবই স্ত্রীর কথায় করেছেন। স্ত্রীর কথা ছাড়া কোনো কাজই করেন না। সেনাবাহিনীতে চাকরি অবস্থায় তেমন কোন অর্থ বা সম্পত্তি ছিল না। অবসরে গিয়ে অপকর্মে জড়িয়ে এসব করতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। আরও জানা যায়, সাবেক ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ ডিলুর আত্মীয় নোমান সিদ্দিকীর স্ত্রী সাফিয়া সুলতানা স্বর্না।
স্থানীয়রা জানান, প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত থাকা নোমান সিদ্দিকী মাঝে-মধ্যে গ্রামের বাড়িতে আসতেন। তবে স্বাভাবিক চলাফেরা করতেন। গ্রামে তেমন কিছু করেননি। তার বাবা মৃত আবু তাহের ছিলেন সাধারণ মানুষ। তিনি কৃষি কাজ করতেন। তারা তিন ভাই। বড় ভাই মো. ওমর ফারুক রামদয়াল বাজারে ফার্মেসি ব্যবসা করেন, মেঝো ভাই মো. সালাউদ্দিন সেনাবাহিনীতে ওয়ারেন্ট অফিসার হিসেবে কর্মরত রয়েছে। নোমান সিদ্দিকী ভাইদের মধ্যে ছোট। নোমান সিদ্দিকী রামগতির চর আলগী ইউনিয়নের চর মেহের গ্রামে ৯ নম্বর ওয়ার্ডে আবু তাহের মিয়ার বাড়ি মৃত আবু তাহের মিয়ার ছোট ছেলে।
তার ভাই ওমর ফারুক জানান, পারিবারিকভাবে নোমানের সাথে পরিবারের কারও যোগাযোগ নেই। বিয়ের পর থেকে সে ঢাকায় থাকেন। তার তিন সন্তান রয়েছে। তার বাবা মারা যাওয়ার আগ থেকে পারিবারিক সম্পর্ক বিছিন্ন রয়েছে। কখনো বাড়িতে আসলে সে একা থাকেন। পরিবারের কারও সাথে কথা বা যোগাযোগ করেন না।
প্রসঙ্গত, পিএসসি প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত থাকার অভিযোগে সারাদেশে পুলিশের অভিযানে ১৭ জন মূলহোতা গ্রেপ্তার হন। তাদের মধ্যে গাড়ির ড্রাইভার আবেদ আলীর কাছ থেকে প্রশ্নপত্র নিয়ে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে বেচা-বিক্রি করতেন নোমান সিদ্দিকী। তিনি সেনাবাহিনীর সাধারণ সৈনিক থেকে অবসরে গিয়ে বনে যান ক্রোড়পতি ও গড়ে তোলেন অঢেল বিলাস বহুল প্রাসাদ ও বনে যায় অঢেল সম্পদের মালিক।