বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৪১ অপরাহ্ন
রুহুল আমীন খন্দকার- বিশেষ প্রতিনিধিঃ
আধিপত্য বিস্তার ও রাজনৈতিক বিরোধকে কেন্দ্র করে পাবনার বেড়ায় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে ৫ পুলিশ সদস্যসহ উভয়পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। স্থানীয় সংসদ সদস্য শামসুল হক টুকুর ছেলে আসিফ শামস রঞ্জন ও টুকুর ভাই আব্দুল বাতেনের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
আহত ৩ জনের অবস্থা গুরুতর। তাদের বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে মাহমুদ নামের একজন কনস্টেবলকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ৫ই মে বিকেলে ৫টা থেকে থেমে থেমে এই সংঘর্ষ চলে রাত ১০টা পর্যন্ত।
স্থানীয় সূত্র জানায়- প্রায় ১০ বছর আগে বেড়া পৌর এলাকার বৃশালিখায় হুরাসাগর নদীর তীরে একটি নৌবন্দর গড়ে তোলেন তৎকালীন পৌর-মেয়র ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকুর ভাই তৎকালীন পৌর-মেয়র আব্দুল বাতেন। পরে তা উচ্ছেদ করে বিআইডব্লিউটিএ। পরবর্তী সময়ে ঘাটটি ফের চালু করেছিলেন আব্দুল বাতেন। তিনি নৌবন্দরের পাশে শতাধিক দোকানঘর নির্মাণ করে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মধ্যে বরাদ্দ দেন।
কয়েক মাস আগে অনুষ্ঠিত পৌর নির্বাচনে আব্দুল বাতেন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন থেকে বঞ্চিত হন। নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে মেয়র নির্বাচিত হন সংসদ সদস্য শামসুল হক টুকুর ছেলে আসিফ শামস রঞ্জন। ভাতিজার বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে হেরে যান আব্দুল বাতেন। নির্বাচন ঘিরে দ্বন্দ্বে আব্দুল বাতেনের সঙ্গে সম্পর্কের চরম অবনতি হয় তার ভাই সংসদ সদস্য শামসুল হক টুকুর।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বৃশালিখা ঘাটের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আব্দুল বাতেনের সমর্থকদের সঙ্গে আসিফ শামস রঞ্জন সমর্থকদের সংঘর্ষ বাধে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। এ সময় কিছু বিক্ষুব্ধ লোকজন পুলিশের গাড়িতে হামলা করে। এতে পাঁচ পুলিশসহ গ্রামের প্রায় ১৫ থেকে ২০ জন আহত হন। পরে অতিরিক্ত তিন প্লাটুন পুলিশ এসে বৃশালিখা পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণে নেয়।
বেড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অরবিন্দ সরকার বলেন- সাবেক মেয়র আব্দুল বাতেন ও বর্তমান মেয়র আসিফ শামস রঞ্জন গ্রুপের মধ্যে ঝামেলা হয়েছে। সম্প্রতি পৌরসভার নির্বাচন থেকেই তাদের চাচা ও ভাতিজার মধ্যে ঝামেলার সূত্রপাত শুরু হয়। সেই ঝামেলার অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার দুপুরে বৃশালিখা ঘাট এলাকায় দোকানপাট দখলকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষ মুখোমুখি সংষর্ষে লিপ্ত হয়।
তিনি আরও বলেন- পুলিশ ফোর্স দ্রুত সেখানে পৌঁছালে বাতেন গ্রুপের সমর্থকরা পুলিশের গাড়িতে হামলা করে। এতে পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
ঘটনার বিষয়ে জানতে সাবেক মেয়র আব্দুল বাতেন ও বর্তমান মেয়র আসিফ শামস রঞ্জনের সঙ্গে মুঠো ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদেরকে পাওয়া যায়নি। ঘটনার পর থেকে বৃশালিখা গ্রামে পুলিশের অভিযান চলছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।