রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:০১ অপরাহ্ন
আবুল কাশেম- সিলেট জেলা প্রতিনিধিঃ
সিলেটের বিশ্বনাথ পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর, উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য ও শ্রমিক নেতা ফজর আলীর বিরুদ্ধে গত ২৭শে আগস্ট সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও আমলী ৩নং আদালতে ৩ কোটি টাকা আত্নসাতের অভিযোগে মামলা দায়ের করেছেন তারই খালা শাশুড়ী প্রবাসী আফতেরা বিবি।
মামলা নং ৩২৮/২০২৩ইং। মামলায় ফজর আলীর শ্যালক মাছুম হোসেনকেও অভিযুক্ত করা হয়েছে। বাদী প্রবাসী আফতেরা বিবি পৌর শহরের শাহজিরগাঁও গ্রামের লুকমান মিয়ার কন্যা ও আমরোজ আলীর স্ত্রী।
মামলা প্রসঙ্গে নিজের বক্তব্য তুলে ধরে বিশ্বনাথের স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে বৃহস্পতিবার ১৪ই সেপ্টেম্বর বিকেলে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রেরণ করেছেন পৌর কাউন্সিলর ফজর আলী। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তিনি উল্লেখ করেছেন, আমার উপর যে মামলা কা হয়েছে, তা সম্পূর্ন মিথ্যা ও বানোয়াট। কে বা কাহার প্ররোচনায় উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে আমাকে জড়িয়ে ওই মামলা করা হয়েছে।
মামলার বাদী প্রবাসী আফতেরা বিবি হচ্ছেন আমার খালা শাশুড়ী ও অপর অভিযুক্ত মাছুম হোসেন হচ্ছেন আমার শ্যালক। তাদের বিরুধের মূলত বিষয় হচ্ছে পারিবারিক বিরুধ ও এর জের ধরে চলমান রয়েছে একাধিক পাল্টাপাল্টি মামলা, আর আমি (ফজর) ছিলাম সেই বিরুধ নিষ্পত্তির মধ্যস্থতাকারী।
সালিশে আমি (ফজর) আমার খালা শাশুড়ীর পক্ষে অন্যায়ভাবে পক্ষপাতিত্ব করি নাই বলেই তিনি (আফতেরা) আমাকে (ফজর) হিংস্বাত্বকভাবে ওই সাজানো মামলায় অভিযুক্ত করেছেন। উনার পক্ষে সালিশের রায় দিলে তিনি (খালা শ্বাশুড়ী আফতেরা বিবি) আমাকে লন্ডন নেয়ার প্রলোভন দিয়ে ছিলেন। কিন্তু আমি তার অন্যায় প্রস্তাব গ্রহন করিনি।
আমার খালা শাশুড়ী আফতেরা বিবি একই বিষয়ে ৩টি মামলা দায়ের করেছেন। যার প্রথম দুটিতে শুধুমাত্র আমার শ্যালক মাছুম হোসেনকে অভিযুক্ত করেছেন, আর তৃতীয়টিতে এসে আমার শ্যালকের সাথে আমাকে অভিযুক্ত করেছেন। অথচ আমার খালা শাশুড়ীর দায়ের করা ৩টি মামলার মধ্যে ইতিমধ্যে তদন্ত সাপেক্ষে মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় একটি মামলার ফাইনাল রির্পোট দিয়েছেন বিশ্বনাথ থানার এসআই গাজী মোয়াজ্জেম হোসেন।
যার নম্বর ‘বিশ্বনাথ বিবিধ মামলা নং ৬৩/২০২৩ইং। সুষ্ঠু তদন্তের পর অপর দু‘টি মামলাও মিথ্যা প্রমাণিত হবে ইনশাআল্লাহ। আর উদ্দেশ্য প্রনোদিত না হলে একই বিষয়ে তিনি (আফতেরা) ভিন্ন ভিন্ন তারিখে তিনটি মামলা করতে না। এতেই প্রমাণিত হয় উনার দায়ের করা মামলাগুলো বেআইনী, বিভ্রাত্তিকর, উদ্দেশ্য প্রনোদিত ও মানহানিকর ছাড়া আর কিছুই নয়।
উনি আমার খালা শাশুড়ী (আফতেরা বিবি) হয়েও সালিশ বৈঠকে উনার পক্ষে রায় না নেওয়ার কারণে যেহেতু আমাকে অন্যায়ভাবে সাজানো মিথ্যা মামলায় অভিযুক্ত আসার (ফজর) মানহানী করেছেন, সেহেতু আমিও আইনিভাবে এর মোকাবেলা করব এবং উনার (আফতেরা) বিরুদ্ধে মানহানির অভিযোগে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছি।
এবিষয়ে জানতে চাইলে মামলার বাদী আফতেরা বিবিকে একাধিকবার কল দেয়া হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
জানতে চাইলে পৌর কাউন্সিলর ফজর আলীর শ্যালক মাছুম হোসেন বলেন, দীর্ঘ ৭/৮ বছরে তিনি (মাছুম) তার খালার প্রায় ৭০ লাখ টাকার কাজ করেছেন। ইতিমধ্যে ৫০ লাখ টাকা পেয়েছেন। তার বাকি পাওনা ২০ লাখ টাকা চাইলে তিনি তার ছেলে ফয়সল আহমদের একটি চেক দিয়েছেন। ব্যাংকে গিয়ে এই চেকে টাকা না থাকায় চেক ডিসঅনার হয়েছে।
ফলে তিনি আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে খালা আফতেরা বিবিও আদালতে তার বিরুদ্ধে জমি ক্রয় সংক্রান্ত ৩ কোটি টাকা আত্মসাতের তিনটি মামলা করেন। তারমধ্যে একটি মামলা তদন্ত করে আদালতে ফাইনাল রিপোর্ট দিয়েছে পুলিশ। বিবিধ মামলা নং ৬৩/২০২৩ইং।