রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:০৬ অপরাহ্ন
আফজাল হোসেন- দিনাজপুর জেলা প্রতিনিধিঃ
দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার ১০নং পুনট্টি ইউপির উত্তর শিবনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুইতলা ভবন থাকলেও শিক্ষার্থীর উপস্থিতি নেই একেবারেই।
অত্র বিদ্যালয়ে কাগজ কলমে ৬৯ জন শিক্ষার্থী থাকলেও বাস্তবে উপস্থিতি মেলে ২-৩ জন শিক্ষার্থীর। গতকাল সোমবার দুপুর ১২টায় চিরিরবন্দর উপজেলার ১০নং পুনট্ট্রি ইউপির উত্তর শিবনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় প্রধান শিক্ষক মোঃ ফরহাদুল ইসলাম ১৪/০১/১৯৯৩ইং সালে ঐ বিদ্যালয়ে যোগদান করে বর্তমান তিনি সেই বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে ঐ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করলেও শিক্ষার তেমন কোন উন্নতি করতে পারেননি তিনি। কাগজ কলমে প্রথম শ্রেণিতে ১৩ জন ছাত্র-ছাত্রী, ২য় শ্রেণিতে ১২ জন ছাত্র-ছাত্রী, ৩য় শ্রেণিতে ১৮ জন ছাত্র-ছাত্রী, ৪র্থ শ্রেণিতে ৮ জন ছাত্র-ছাত্রী এবং ৫ম শ্রেণিতে ৯ জন ছাত্র-ছাত্রী সহ মোট ৬৯ জন শিক্ষার্থী একটি তালিকা দেখান প্রধান শিক্ষক।
বাস্তবে শ্রেণিকক্ষে ঘুরে ঘুরে প্রথমে ১ জনের উপস্থিতি দেখা যায়। দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করে আরও ২ জন শিক্ষার্থীদের মুঠোফোনে ডেকে নিয়ে আসেন শিক্ষকরা। সর্বশেষ পুরো বিদ্যালয় মিলে ৩ শিক্ষার্থীর উপস্থিতি।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক ফরহাদুল ইসলামের সাথে কথা বললে তিনি জানান, আমি বিদ্যালয়ে শিক্ষার মান অগ্রগতি করতে চেষ্টা করছি এবং শিক্ষার্থী বাড়ানোরও চেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু ছাত্র-ছাত্রী না আসলে আমি কী করব? বিদ্যালয়ের সভাপতির নাম জানতে চাইলে এবং মোবাইল নম্বর চাইলে তিনি দিতে অনিহা প্রকাশ করেন, বিদ্যালয়টিতে বর্তমানে ৪ জন শিক্ষক রয়েছেন।
বিদ্যালয়ের ৩য় শ্রেণির ক্লাসরুমের ব্লাকবোর্ডে ১১/০৯/২০২৩ এর ক্লাস নেওয়ার তারিখ লেখা রয়েছে এরপর ক্লাস হয়েছে কিনা কোন শিক্ষক সু-স্পষ্ট ব্যাখ্যা দিতে পারেনি। শিক্ষার্থীর কম উপস্থিতির কারণ হিসাবে পুজার ছুটিকে দায় করেন শিক্ষকবৃন্দ। তারা বলেন পুজার ছুটি হওয়ার কারনে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা ঠিকমত আসেনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায় বিদ্যালয়টিতে লেখাপড়ার মান ভালো না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা আসতে চায় না এবং অভিভাবকরাও বাচ্চাদের পাঠাতে চায় না।
এলাকায় তথ্য নিয়ে জানা যায়, স্কুলে প্রায় সময় সর্বোচ্চ ৭-৮ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত থাকে। অথচ ঐ স্কুলে উপবৃত্তি পায় ৫৭জন শিক্ষার্থী। প্রশ্ন উঠেছে স্কুলে না এসে উপবৃত্তির টাকা কীভাবে পায় শিক্ষার্থীরা।
এ ব্যাপারে চিরিরবন্দর উপজেলা নির্বাহী অফিসার একেএম শরীফুল হক এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বিষয়টি আবগত হলাম তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।