শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:২৫ অপরাহ্ন
মুন্না শরীফ- মাদারীপুর জেলা প্রতিনিধিঃ
গভীর রাতে ১৭টি বসতঘরে ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ স্থানীয় থানার বিরুদ্ধে। শুক্রবার (১৩ জানুয়ারী) অনুমান রাত ২ঘটিকার সময় মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার এনায়েতনগর ইউনিয়নের খানকান্দি এলাকার সাবেক মেম্বার মেসের সরদারসহ পাশ্ববর্তী ১৭টি বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়- মেসের সরদারের ছেরে মিরাজ সরদার(৪২) কে গ্রেফতারের উদ্দেশ্যে ২০/৩০ জন পুলিশ সদস্য এসে ১৭টি বসতঘরে তল্লাশি করে নগদ টাকা ও মোবাইল নিয়ে যায়। নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় আলীনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহেদ পারভেজের সমর্থকরা এই ঘটনা ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগী পরিবার।
এব্যাপারে মিরাজ সরদারের স্ত্রী বলেন- ২০/৩০ জন পুলিশ আইয়া দরজা অনেক পিডাইছে, আমি একা মহিলা দেখে খুলি নাই। পরে শাবল দিয়ে দরজা ভাঙ্গিয়া খুইলা ঘরে ঢোকছে। আমার দরজা খুলি নাই। ছেলে ভয়ে কাপতেছে। দরজা ভাঙ্গার ভয়ে আমার দরজা পরে খুলছি। খোলার পর আমার বালিশের তলে ৫০ হাজার টাকা, মোবাইল ও মিটার স্কেল নিয়ে গেছে। আমরা ডরে কাইন্না মরে গেছি। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
মিরাজ সরদার বলেন- মিলন সরদারের ইটেরভাটায় এনায়েতনগরের ১০০/১৫০ লোকজন কাজ করে। শাহেদ পারভেজ ওই ভাটা ও বাজারের ব্যবসা বাণিজ্য বন্ধ করে দিছে। আমি ওখানে যাই কেন? এইজন্য আমি চারডা মামলা খাইছি। একবছর আগে র্যাবে আমাকে পায়ে গুলি করে। নয় মাস পর গুলি বের করি বরিশাল গিয়ে। বাড়ি থাকতে পারি না প্রশাসনের কারণে। পুলিশ আমাকে মাইরা ফেলার হুমকি দিছে। কিসের জন্য? আমার অপরাধ কি? জানতে চাই। এলাকার মেম্বার চেয়ারম্যানকে জানাইছি, তারা বলেছে ওসি এমপির সাহেবের মিটিং এ আছে। পরে গিয়ে আমরা তাঁর (ওসি) সাথে কথা বলবো।
একই বাড়ির শামীম সরদারের স্ত্রী খুকিমনি বলেন- ‘পুলিশ কি কারণে আসছে, বলতে পারি না। এই ঘরে দরজা অনেক পিডাইছে। আমার ঘর অনেক পিডাইছে। আমার স্বামী বিদাস, ছেলে বিদাস। আমাগো ঘরে কোন লোক নাই। আমার দেবর কে ঘুম থেকে উঠাইছে। মিরাজ ভাইয়ের মেয়ে আমার সাথে ঘুমে ছিলো। মিরাজ ভাই সন্দেহ করে মুখ খুলে দেখে তারা।
ওই বাড়ির আনিস সরদারের ছেলে শহীদুল সরদার বলেন- আলীনগরে গ্যাঞ্জাম। ওই গ্যাঞ্জামে আমরা ৪টি মামলার আসামী। শাহেদ পারভেজের সাথে কথা হয়েছে ওইখানে আমরা আর যাবো না। আমরা চেয়ারম্যানের কাছে বিচার দিছি। তখন থানার ওসি আমাদের উপর খুব গরম ছিল। পরশু মোহাম্মদ তালুকদার কে কোপাইছে আমরা শুনছি। আমরা ওইখানে যাই নাই। গতকাল রাতে আইসা কালকিনি থানার ওসির নির্দেশে ১৭টি বসতঘরে যার যা পাইছে নগদ টাকা ও মোবাইল লুটতলাজ করেছে। মোবাইল টাকা পয়সা সব নিয়ে গেছে। অকথ্যা ভাষায় মহিলাদের গালাগালি করেছে। পুলিশ কেন আসছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মিরাজ সরদার না কি ওই এলাকায় বোমা নিয়ে, লোকজন নিয়ে যায় ও গ্যাঞ্জাম করে। আপনারা একটু খোজ নিয়ে দেখেন। ওই দেশে এনায়েতনগরের কোন লোকজন গিয়ে মারামারি করছে কি না? হাওলাদার ও মোল্লারা মিলে মিলন সরদারের লোকদের মারধর করে। অহেতুক কেন আমাদের হয়রানি করে পুলিশ। আমরা এই ঘটনার সুনির্দিষ্ট যাচাই বাছাই করে বিচার দাবী করছি।
একই বাড়ির রফিক সরদারের স্ত্রী সুমা বলেন- ৩০/৪০ জন পুলিশ এসে দরজা জানালা পারলে ভেঙ্গে ফেলে। একজন লোক দেখলাম পোষাক ছাড়া অনেক খারাপ ভাষায় গালিগালাজ করতেছে।
বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কালকিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামীম হোসেন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন- একাধিক মামলার আসামী মিরাজ সরদারকে গ্রেফতার করার জন্য পুলিশ তার বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করে। ঘর বাড়ি ভাঙচুর ও মালামাল নেওয়ার অভিযোগ মিথ্যা। তিনি আরও বলেন, মিরাজ একজন মাদক ব্যবসায়ী ও বিষ্ফোরক দ্রব্য সাপ্লাই দেন এবং ফাসিয়াতলার ঘটনায় তিনি লিট দেন। মিরাজ ৩/৪ কিলোমিটার এলাকা সোর্স মেইনটেইন করে চলেন এবং এলাকা নিয়ন্ত্রণ করে।