বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৩২ অপরাহ্ন
আবুল কাশেম- সিলেট জেলা প্রতিনিধিঃ
আগামী ২রা নভেম্বর অনুষ্ঠিত হচ্ছে সিলেটের বিশ্বনাথ পৌরসভার প্রথম নির্বাচন। এই নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অংশগ্রহন করছে না বিএনপি। তবে মেয়র এবং কাউন্সিলর পদে বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের অনেক নেতাকর্মী নির্বাচনে প্রার্থী হতে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
তাই দলীয় নেতাকর্মীদেরকে নির্বাচন বর্জন করার আহ্বান জানিয়েছেন উপজেলা বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট মোঃ খালেদ হোসেন। তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পৌর নির্বাচন বর্জনের আহ্বান জানিয়ে একটি স্ট্যাটাস দেন।
পাঠকের জন্য ওই স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো-
আসসালামু আলাইকুম। সম্মানিত বিশ্বনাথ উপজেলা ও পৌর বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, কৃষকদল, ছাত্রদল এবং অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ আপনারা নিশ্চয়ই অবগত আছেন নির্বাচন কমিশন বিশ্বনাথ পৌরসভা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছেন এবং ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কল্যাণে জানতে পারি আমাদের দলের অনেকেই নির্বাচনে মেয়র ও কাউন্সিলর পদে প্রার্থীতা ঘোষণা করেছেন।
আপনারা নিশ্চয়ই জানেন বাংলাদেশে জাতীয়তাবাদী দল দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় ধরে মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম চালিয়ে আসছে এবং ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে আমাদের প্রিয় নেতা এম ইলিয়াস আলী তাহার গাড়ি চালক আনছার আলী সহ বর্তমান অনির্বাচিত নীশিরাতের সরকারের, গুম নামক কারাগারে বন্দি হয়ে আছেন। আমরা হারিয়েছি জাকির, সেলিম, মনোয়ারদের।
বিশ্বনাথের অসংখ্য নেতাকর্মী মিথ্যা মামলায় জেল, জুলুম, নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল ইতিমধ্যে ঘোষণা দিয়েছে, এই সরকারের অধীনে কোন নির্বাচনে অংশ গ্রহন করবে না এবং বিভিন্ন সভা সমাবেশে ইভিএম পদ্ধতির নির্বাচনে তীব্র আপত্তি করে আসছে।
সম্মানিত জাতীয়তাবাদী দলের মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীগণ আপনারা অনেকেই মনে করতে পারেন এটা স্থানীয় নির্বাচন, তাই আমি/আমরা অংশগ্রহন করলে দলের কি এমন ক্ষতি হবে। আপনাদের উদ্দেশ্যে যথেষ্ট শ্রদ্বারেখে বলছি, জাতীয়তাবাদী দলের কেউ এই নির্বাচনে অংশগ্রহন করলে অবশ্যই দলের ক্ষতি হবে, আপনারা এই নির্বাচনে অংশ গ্রহন করলে এই নীল নকশার নির্বাচন বৈধতা পাবে, বৈধতা পাবে ইভিএম পদ্বতি, ফিরে আসবে নির্বাচনী আমেজ।
এই সরকারের অধীনে কোন সময় সুষ্ঠ নির্বাচন আশা করা যায় না বরং আমরা এই নির্বাচন বর্জন করার মাধ্যমে ২০১৪ইং সালের সংসদ নির্বাচনের মতো জাতিকে একটি বার্তা দিতে পারি! আমরা সকলেই অবগত আছি ২০১৪ইং সালের সংসদ নির্বাচনের পরের দিন দেশের সকল জাতীয় দৈনিক পত্রিকা এবং সকল টেলিভিশনের খবর ছিল, বিশ্বনাথের একটি ভোট কেন্দ্রে (এম ইলিয়াছ আলী ভাইয়ের নিজ ইউনিয়নের, রামধানা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে) একটিও ভোট পড়েনি।
আমরা জাতীয়তাবাদী দলের নেতা কর্মীরা নির্বাচনে অংশ না নিলে বিশ্বনাথের প্রথম পৌরসভা নির্বাচন ভোটার সংকটের কারণে ব্যর্থ নির্বাচনে রুপ নিবে, লজ্জা পাবে নির্বাচন কমিশন, লজ্জা পাবে বর্তমান সরকার, লজ্জা পাবে ইভিএম পদ্ধতি। এই নির্বাচন বর্জনের মাধ্যমে আমরা বাড়াতে পারি বিশ্বনাথ উপজেলা ও পৌর বিএনপির সম্মান। সর্বোপরি বাড়বে আমাদের প্রিয় নেতা জনাব এম ইলিয়াস আলী ভাইয়ের সম্মান।
আমি মনে করি বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলন জমে উঠেছে, এই আন্দোলনকে নস্যাৎ করতে এবং ইভিএম পদ্ধতির নির্বাচনের বৈধতা নিতে সরকার দেশের বিভিন্ন জায়গায় স্থানীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা দিয়েছে। আমাদের নিশ্চয়ই মনে আছে, বিশ্বনাথ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন এবং সদ্য সমাপ্ত খাজাঞ্চী ইউপি নির্বাচনের কথা। কিভাবে হয়েছিল আমরা সকলেই অবগত আছি।
আমাদের জাতীয়তাবাদী দলের নেতাকর্মী, সমর্থক সকলেই বিশ্বনাথ পৌরসভা নির্বাচন বর্জন করা বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনেরই অংশ। তাই আসুন সামান্য ব্যক্তি স্বার্থ বিসর্জন করে আমরা জাতীয়তাবাদী দলের বিশ্বনাথের সকল স্তরের নেতাকর্মী, সমর্থক বিশ্বনাথ পৌরসভা নির্বাচন বর্জন করি এবং যে খেলায় কে জয়লাভ করবে আগেই নির্ধারিত সেই পাতানো নির্বাচনের ভোট কেন্দ্রে ভোটারদের না যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে ২০১৪ইং সালের মতো খবরের শিরোনাম হয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের আন্দোলন সংগ্রামকে আরো বেগবান করি।