সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:১৪ পূর্বাহ্ন
আবুল কাশেম- সিলেট জেলা প্রতিনিধিঃ
সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার ৪নং রামপাশা ইউনিয়নের ‘আমতৈল পঞ্চগ্রাম মোহাম্মদীয়া দাখিল মাদরাসাটি’ দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। জাল জালিয়াতি করে ইবতেদায়ি থেকে দাখিল মাদরাসায়। ইবতেদায়ি প্রধান থেকে এখন সুপার। একজন মাদরাসা সুপার হয়ে এমন ভয়ানক জালিয়াতির ঘটনা ও নিয়োগ বাণিজ্য করে কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃস্টি হয়েছে।
এ ঘটনায় সাবেক চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান মাদরাসা সুপার রায়হান উদ্দিন, বর্তমান সভাপতি আলা উদ্দিন ও বিশ্বনাথ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সমীর কান্তি দে কে অভিযুক্ত করে বিশ^নাথ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
থানায় দাখিলকৃত অভিযোগে আজিজুর রহমান উল্লেখ করেন, ১৯৯৯ সালে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় মাদসাটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। সরল বিশ^াসে জমশেরপুর গ্রামের মাওলানা রায়হানকে ইবতেদায়ী শিক্ষক পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। এর কিছুদিন পর মাওলানা রায়হান উদ্দিন সভাপতি আজিজুর রহমান, ইউএনওসহ শিক্ষক নিয়োগ কমিটির সকলের স্বাক্ষর জাল করে নিজেকে মাধ্যমিক পর্যায়ের সুপার হিসেবে নিয়োগের কাগজপত্র দাখিল করেন।
তখন সভাপতি আজিজুর রহমানের স্বাক্ষর জাল করে ৫ লক্ষ টাকা ঘুষ নিয়ে আজিজুল হক নামের একজনকে কম্পিউটার অপারেটর নিয়োগ প্রদান করেন। মাদরাসাটি এমপিও ভুক্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত যে সকল শিক্ষক সরকারি চাকুরীর আশায় পরিশ্রম করেছেন, তাদেরকে বাদ দিয়ে বিভিন্ন জেলার ১৫/১৬ জনের কাছ থেকে ৪লক্ষ টাকা করে ঘুষ নিয়ে তাদের নামের তালিকা শিক্ষা অধিদপ্তরে প্রেরণ করেন মাদাসার সুপার রায়হান উদ্দিন।
শুধু তাই নয়, এমপিও ভুক্তি প্রাপ্ত শিক্ষকদের সরকার প্রদত্ত ১৭মাসের বকেয়া বেতন প্রায় ৪০লক্ষ টাকাসহ মোট প্রায় ১ কোটি টাকা জালিয়াতি ও প্রতারনার মাধ্যমে আত্মসাত করেছেন বলে এজহারে উল্লেখ করা হয়।
ছাতক উপজেলার শেখপাড়া গ্রামের মিয়াজান আলীর পুত্র নুর উদ্দিনকে শিক্ষক নিয়োগ দেয়ার কথা বলে ৪ লক্ষ টাকার চুক্তিকরে ১লক্ষ টাকা নগদ গ্রহণ করেন রায়হান উদ্দিন। বাকী ৩ লক্ষ টাকা প্রদানে বিলম্ব হওয়ায় পাবনার শহিদুল ইসলাম নামের আরেক জনের নিকট থেকে ৪লক্ষ টাকা নিয়ে নিয়োগ দেওয়া হয়। টেলিফোনে নুরুদ্দিন এ প্রতিনিধির নিকট ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন।
এসব অনিয়ম, দুর্নীতি ও জালিয়াতির ঘটনার সাথে জড়িত রয়েছেন, প্রতিষ্টানের বর্তমান সভাপতি আলা উদ্দিন। ঘুষ, দুর্নীতির মুল নায়ক সুপার রায়হান উদ্দিন হলেও নেপথ্যে নায়ক হচ্ছেন, মাধ্যমিক কর্মকর্তা সমীর কান্তি দে।
এ বিষয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সমীর কান্তি দে জানান- নিয়োগের বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। তাঁর উপর আনিত অভিযোগ মিথ্যা।
মাদরাসা সুপার রায়হান উদ্দিন সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে জানান- ঘুষ, দুর্নীতির সবগুলো অভিযোগ সত্য নয়। অভিযোগের বিষয়ে বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইনচার্জ গাজী আতাউর রহমান বলেছেন, অভিযোগ তদন্ত করা হচ্ছে, প্রমাণিত হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে আমতৈল গ্রামের হুমায়ুন রশিদ, মাহতাব উদ্দিনসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা মাদরাসার জাল-জালিয়াতি ও কোটি টাকা আত্মসাতের বিষয়টি সরজমিন তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানিয়েছেন।