সোমবার, ১৪ Jul ২০২৫, ০৭:২৪ অপরাহ্ন

সর্বশেষ সংবাদঃ
অনলাইন ভিত্তিক গণমাধ্যম “৭১সংবাদ২৪.কম” এ প্রতিনিধি আহ্বান করা হয়েছে। আগ্রহীগণ জিবনবৃত্তান্ত পাঠাতে 71sangbad24.com@gmail.com -এ মেইল করুন
সংবাদ শিরোনামঃ
ধুনটে বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস পালিত নীলফামারীতে ছাত্রদলের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ ধুনটে হ্যান্ডকাপসহ পলাতক আসামিকে গ্রেপ্তার পীরগঞ্জে বিএনপি’র মা সমাবেশ অনুষ্ঠিত পীরগাছা প্রেসক্লাবের কার্যনির্বাহী কমিটি গঠণ নড়াইলে খুলনার রেঞ্জ ডিআইজিকে ফুলেল শুভেচ্ছা রাণীশংকৈলে ৭৫ জন গ্রাম পুলিশ পেলেন বাই-সাইকেল ও পোশাক আজকের গাছ- আগামীর নিঃশ্বাস- বৃক্ষরোপনে ইউএনও রুবেল রানা ইছামতী নদীতে থেকে নবজাতকের লাশ উদ্ধার কিশোরগঞ্জকে গ্রীন ও ক্লিন কিশোরগঞ্জ গড়তে চাই- নবাগত ইউএনও নীলফামারীতে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইমারত নির্মাণ তারাগঞ্জে একই ব্যক্তির ৬ গরু চুরি নড়াইলে এক গৃহবধূর তিন সন্তান জন্ম ধুনটে বসতভিটা অবৈধ দখল চেষ্টায় থানায় অভিযোগ আবু সাঈদের রক্তের সাথে বেইমানী করবেন না- এটিএম আজহার ফুলবাড়ীর দৌলতপুরে জমি জমার বিরোধে মারপিট ১৭ বছর পর রংপুরে জামায়াতে ইসলামীর জনসভা অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে বিএনপি নেতা জুলাই বিপ্লবী শহীদের স্মরণে বৃক্ষরোপণ ও আলচনা ত্রিশালে নিখোঁজ ব্যক্তির লাশ মিলল পুকুরে

মাদারীপুর সদর সাব-রেজিষ্ট্রি অফিস সিন্ডিকেট দখলে- চলছে রমরমা কমিশন বাণিজ্য

মুন্না শরীফ- মাদারীপুর জেলা প্রতিনিধিঃ
মাদারীপুর সদর সাব রেজিষ্ট্রি অফিস এখন দলিল লেখক ও কর্মকর্তা কর্মচারীদের সিন্ডিকেটের দখলে। দলিল লেখক ও অফিস কর্মচারীদের সিন্ডিকেটের কবলে জিম্মি হয়ে পড়েছে এখানে সেবা নিতে আসা নাগরিকেরা। কোন নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে নিজেদের মত করে নিয়ম তৈরী করে সারা বছরই চলে এই সদর সাবরেজিষ্টারি অফিসের কার্যক্রম। এসব সিন্ডিকেটের বেপরোয়া দুর্নীতি বাণিজ্যে কাছে জিম্মি সাধারণ নাগরিকেরা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়- মাদারীপুর শহরের জিরো পয়েন্ট এলাকার জেলা রেজিষ্ট্রি অফিসের নিচ তলায় সদর সাব রেজিষ্ট্রি অফিস। তার পাশেই একটি টিনশেড ঘরে দলিল লেখকদের অফিস। সদর সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সাথে স্থানীয় দলিল লেখকদের সাথে অদৃশ্য কমিশন বাণিজ্যের সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। এখানে দলিল করতে আসা সকল সেবা গ্রহীতাকে ১৫ থেকে ২০ পার্সেন্ট অতিরিক্ত টাকা গুনতে হয়। তাছাড়া কোন রকমের ভুল ত্রম্নটি থাকলে সেই দলিল রেজিষ্ট্রি করতে বিশেষ উৎকোচ গ্রহণেরও অভিযোগ রয়েছে। এসব সিন্ডিকেটের কবলে জিম্মি হয়ে পড়েছে মানুষ। দলিল করতে আসা মানুষেরা তাই বাধ্য হয়েই কোন বিকল্প উপায় না থাকায় সিন্ডিকেটের চাহিদাকৃত টাকা দিয়ে দলিল সম্মাদন করেন।

মাদারীপুর সদর উপজেলার কেন্দুয়া ইউনিয়ন থেকে সাগর সরদার। একটি জমি রেজিষ্ট্রি করার জন্য সদর সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে এসেছেন। দশ লাখ টাকা মূল্যমানের তার জমিটিতে সরকারের নির্ধারিত সাড়ে ৬ শতাংশ হারে টাকা ব্যাংকে জমা দেওয়ার ছাড়াও দলিল লেখক ও সাব রেজিষ্ট্রি অফিসের সিন্ডিকেটকে ৮০ হাজার টাকা বেশি দিতে হয়েছে। সিন্ডিকেটের চাহিদা মত টাকা দেওয়ার পরেও তাকে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত্ম সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসে বসে থাকতে হয়েছে। মাদারীপুর শহরের ১নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা রাকিব হাসান। তিনি তার চাচাতো ভাইয়ের দুই শতাংশ একটি জমির দলিল করতে এসেছে সদর সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে।

কিন্তু সরকারি খরচের ছাড়াও তাকে ৩৫ হাজার টাকা দলিল লেখক ও রেজিষ্ট্রি অফিসের কর্মচারীদের অতিরিক্ত দিতে হয়েছে। শুধু এই দুই ব্যক্তিই নয়। প্রতি সপ্তাহে মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবার যে কোন ব্যক্তিই মাদারীপুর সদর উপজেলা সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসে সেবা নিতে এসে সিন্ডিকেটের কবলে পড়েন। মাদারীপুরবাসী এই দালাল সিন্ডিকেটদের কাছে জিম্মি।

সদর সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসের সেবা গ্রহীতা রাকিব হাসান বকুল বলেন- সদর সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে দলিল লেখক ও কর্মচারীরা মিলে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট তৈরী করেছে। তাদের চাহিদা মত টাকা না দিলে এই অফিসের কোন সেবা পাওয়া যায় না। আমরা অনেকটা বাধ্য হয়েই তাদের চাহিদামত টাকা দিয়ে সেবা নিচ্ছি।

মাদারীপুর বাস-মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসে সেবা নিতে আসেন। তিনি বলেন,’এই অফিসের কাছে মানুষ জিম্মি হয়ে পড়েছে। আমরা চাই, দালাল ও দুর্নীতি মুক্ত এই অফিসটি হোক। এখানে সেবা নিতে এসে যেন আমরা কেউ বিড়ম্বনায় না পড়ি, সরকার যেন সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করে। এখানে বেশি টাকা ছাড়া কোন কাজ করা যায় না।

তবে, দলিল লেখক সমিতির নেতৃবৃন্দ ও সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসের কর্মকর্তারা এসব সিন্ডিকেটের কথা অস্বীকার করেন। মাদারীপুর সদর উপজেলা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি দিদার হোসেন বলেন- পার্টিরা এখানে দলিল করতে আসলে আমরা তাদের কাছ থেকে কোন বেশি টাকা নেই না। তারা খুশি হয়ে আমাদের যা দেয়। আমরা তাই নেই। তিনি বলেন, আমরা সিন্ডিকেট করেও কোন কাজ করি না। টাকাও নেই না।

একই ধরনের কথা বললেন সদর উপজেলা সাব রেজিষ্ট্রার শর্মিলী আহমেদ শম্পা। তিনি বলেন- আমাদের কাছে কেউ কখনো অভিযোগ নিয়ে আসে না। যদি কেউ বাড়তি টাকা নেওয়ার অভিযোগ দেয়। তাহলে বিষয়টি দেখব। আর আপনারা সাংবাদিক। আপনারাও দেখেন। কোথাও সিন্ডিকেট। বের করেন।

তবে সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসে দলিল লেখক সমিতি ও কর্মচারীরা সেবা গ্রহীতাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করে জেলা রেজিষ্ট্রার মোঃ রুহুল কুদ্দুস বলেন- এটা তো অনেক দিনের প্রাকটিস। হুট করেই দলিল লেখক সমিতির এই সিন্ডিকেট বদলানো যাবে না। তবে আমরা মানুষকে সচেতন করার জন্য বিভিন্ন ধরনের সচেতনতা কর্মসূচী গ্রহণ করে থাকি। পাশাপাশি সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসের সকল আবেদন অনলাইনে হয়ে গেলে তখন দুর্নীতি ও বেশি টাকা নেওয়ার যে অভিযেগা আসে, সেগুলো বন্ধ হয়ে যাবে। এটা একটু সময় লাগবে। তবে, কেউ যদি নির্দিষ্ট করে কোন অভিযোগ আমার কাছে দেয়। তাহলে আমি ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

মাদারীপুরের সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসে দলিল লেখক ও কর্মকর্তা কর্মচারীদের সিন্ডিকেট বাণিজ্য বন্ধ করে সরকারি নিয়মের নির্ধারিত ফি এর মাধ্যমে কার্যক্রমর পরিচালনার দাবী জানিয়েছেন সচেতন নাগরিকেরা।

সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

©2019 copy right. All rights reserved 71sangbad24.com
Design & Developed BY Hostitbd.Com