Thursday, April 25, 2024
Homeচট্টগ্রাম বিভাগনোয়াখালী জেলাহাতিয়া হাসপাতালে মেঝেতে ২ঘন্টা চিৎকার করেও মেলেনি ডাক্তার, রোগীর মৃত্যু,বদলি-৩

হাতিয়া হাসপাতালে মেঝেতে ২ঘন্টা চিৎকার করেও মেলেনি ডাক্তার, রোগীর মৃত্যু,বদলি-৩

হানিফ সাকিব- নোয়াখালি জেলা প্রতিনিধিঃ
নোয়াখালী দ্বীপ হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে শ্বাসকষ্ট ও বুকে ব্যাথা নিয়ে হাসপাতালের জরুরী বিভাগে আসেন সালা উদ্দিন (৫৫) নামে এক রোগী। জরুরী বিভাগের রুমটি খোলা থাকলেও সেখানে ছিল না কোনো ডাক্তার, নার্স পিয়ন কিংবা হাসপাতালের কেউ। স্বজনদের চারদিকে ছোটচাছুুিট করেও দেখা পায় নি কোন চিকিৎসকের।

দুই ঘন্টা জরুরী বিভাগের মেঝেতে পড়ে চিৎকার করতে করতে নিস্তেজ হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে সালা উদ্দিন। রোববার সকালে এই হৃদয় বিদারক ঘটানাটি ঘটে নোয়াখালী দ্বীপ হাতিয়ায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।

মৃত সালা উদ্দিন(৫৫) উপজেলার তমরদ্দি ইউনিয়নের পূর্ব ক্ষিরোদিয়া গ্রামের মৃত মোজাফ্ফর আহাম্মদের ছেলে। তিনি হাতিয়া দ্বীপ উন্নয়ন সংস্থার সিকিউরিটি গার্ড হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

এই ঘটনায় নোয়াখালী জেলা সিভিল সার্জন ডাক্তার ডাক্তার মাসুম ইফতেখার তাৎক্ষনিক জরুরী বিভাগে দায়িত্ব পালন করা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সহকারী সার্জন ডাক্তার দীপ্ত চন্দ্র কুরী, উপ- সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ইখতিয়ার উদ্দিন ও পরিচ্চন্নকর্মী আশ্রাফ আলীকে শাস্তি মুলক ভাসানচরে বদলি করেন। এবং লিখিত ভাবে এই ঘটনায় জবাব চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়।

মৃত ব্যক্তির ছেলে মোঃ সোহেল বলেন- ভোর রাতের দিকে আমার বাবার বুকে প্রচন্ড ব্যাথা দেখা দেয়। সকাল ৬টায় বাবাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে নিয়ে আসি। তখন জরুরী বিভাগে কোন ডাক্তার, নার্স বা অন্য কেউ ছিলনা।

এদিকে বাবার ব্যথা আরও বেড়ে যায়। চারদিকে দৌড়াদৌড়ি করেও কাউকে পাইনি। প্রায় দুই ঘন্টা জরুরী বিভাগের মেঝেতে পড়ে চিৎকার করতে করতে নিজের চোখের সামনেই প্রাণ যায় বাবার।

সোহেল আরো অভিযোগ করে বলেন- জরুরী বিভাগে ছিলনা কোন মোবাইল নাম্বার। এসময় কারা দায়িত্ব পালন করছেন তা উল্লেখ ছিলনা কোন জায়গায়।

উপস্থিত অনেকে ক্ষোভ প্রকাশে অভিযোগ করে বলেন- হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এর আগেও ডাক্তারের অবহেলায় অনেক রোগীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এখানে দায়িত্বরত নার্সদেরও আচরণ অনেক খারাপ। তারা রেগীর লোকদের থেকে টাকা দাবি করে এবং টাকা না দিলে সেবা প্রদানে অবহেলা করে।

এদিকে ডাক্তারের অবহেলায় রোগীর মৃত্যু ঘটনাটি ছড়িয়ে পড়লে টনক নড়ে প্রশাসনের। প্রথমে অভিযোক্ত সবাইকে কারন দর্শানো নোটিশ দেওয়া হয়। পরে তিনজনকে শাস্তি মূলক ভাসনচরে বদলি করা হয়। সবশেষে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি করে ৫ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়।

এব্যাপারে হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাক্তার নাজিম উদ্দিন বলেন- অভিযুক্তদের ব্যাপারে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আজই তাদেরকে ভাসানচরে বদলি করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনে দোষী প্রমানিত হলে তাদের বিরুদ্ধে আরো বড় ধরনের শাস্তি গ্রহণ করা হবে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments